মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলকে বলা হয় বাংলাদেশের ঝর্নার স্বর্গ
মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলকে বলা হয় বাংলাদেশের ঝর্নার স্বর্গ। এই রুটে কেবল ট্রেইলই আছে ১০টি। যে ট্রেইলেই যাবেন সহজে বলে দিলাম কি কি আছে এবং যাওয়ার পথের রুট।
খইয়াছড়া ট্রেইল - মিরসরাই সীতাকুন্ড রুটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেইল এটি। এখানে রয়েছে ৮ স্টেপ বিশিষ্ট ঝর্ণা আরো উপরে গেলে ডাবল ফলস। খৈয়াছড়ার ঝর্ণার সবগুলো স্টেপ ছাড়িয়ে আরো অনেকটুকু গেলে শেষ সীমা “আমতলী কুম” , সেখান থেকে হাতের ডানপাশে (দক্ষিণ) একটি চিকন ঝিরি। সেই পাথুরে সংকীর্ণ ঝিরিপথে একটু এগুলে পাবেন ৩ স্টেপ বিশিষ্ট “শিমুলতলী ঝর্ণা”।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে মিরসরাইয়ের আগে বড় তাকিয়া বাজারে। এখান থেকে খইয়াছড়া স্কুলের পাশ থেকে সোজা পূর্ব দিকে চলে যাবেন।
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল- মিরসরাই রুটের অন্যতম সুন্দর একটি ট্রেইল নাপিত্তাছড়া ট্রেইল। নাপিত্তাছড়া, বাঘবিয়ানী ও বান্দরকুম ও কুপিকাটাকুম নামে চারটি ঝর্ণা এই ট্রেইলে। ঢাকা থেকে নামবেন মিরসরাইয়ের পর নয়াদুয়ারী বাজারে।
বোয়াইল্যা বাউশ্যা ট্রেইল- এই ট্রেইলটি হলো মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ট্রেইল। এই
ট্রেইলে আছে বোয়াইল্যা বাউশ্যা অমরমানিক্য ঝর্ণা। এই রুটে মোট তিনটি ঝর্ণা। এছাড়া আছে ন হাইত্যে কুম, এবং উঠান ঢাল। এই ট্রেইলটা এককথায় অপূর্ব এবং অতুলনীয়।
যেভাবে যাবেন - ঢাকা থেকে নামবেন মিরসরাই বাজারে। মিরসরাই কলেজ রোড থেকে ব্র্যাক পোল্ট্রি ফিড পর্যন্ত যাওয়ার সিএনজি পাবেন। ওখানে নেমে পূর্বদিকে হাঁটা ধরবেন।
হরিণমারা হাঁটুভাঙ্গা ট্রেইল- এই ট্রেইলটা মিরসরাই রুটের অন্যতম সুন্দর একটি ট্রেইল। এই ট্রেইলে পাবেন হরিণমারা, হাঁটুভাঙ্গা এবং সর্পপ্রপাত ঝর্ণা। এছাড়াও সর্পপ্রপাতের পাশে বাওয়াছড়ার মুখ। এই রুটে ঢুকতেই পাবেন অপূর্ব নীলাম্বর লেক।
যেভাবে যাবেন- যেভাবে যাবেন – ঢাকা অথবা চট্টগ্রামী যেকোনো বাসে সীতাকুণ্ডের আগে ছোট কমলদহ বাজার। বাজারের পরের রাস্তা আর বাইপাস যেখানে মিলেছে সেখানে নামবেন। রাস্তার পূর্ব দিকে ঢুকবেন। বাকিটা রাস্তা ধরা গেলে আর ছড়ার পথ ধরে এগিয়ে যাবেন।
সোনাইছড়ি ট্রেইল - এই ট্রেইলটি বাকি ট্রেইলগুলোর তুলনায় অপরিচিত এবং দুর্গম। তবে এককথায় অপার্থিব। বিশাল বিশাল পাথর আর গিরিখাদের সমন্বয়ে এই ট্রেইল। আছে গভীর বাদুইজ্যা কুম। একপাশে পাহাড়ের খাঁজ আর নিচ দিয়ে চলার পথ। অনেক জায়গায় সূর্যের আলোতেও ছায়া পড়ে।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে মিরসরাইয়ের পরে নামবেন হাদী ফকিরহাট বাজার। তারপর রাস্তার পূর্ব দিকে হাঁটা ধরবেন।
বাড়বকুন্ড ট্রেইলে- এই ট্রেইলে পাবেন বাংলাদেশের একমাত্র গরম পানির ঝর্ণা। কালভৈরবী মন্দির ও অনিন্দ্য সুন্দর পাহাড়ী ঝিরি পথ এবং বেশ কয়েকটি ছোট ক্যাসকেড ও কুম।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে নামবেন বাড়বকুন্ড বাজারে। সীতাকুন্ডের পরই বাড়বকুন্ড বাজার। বাড়ব কুন্ড বাজার থেকে ৪০ -৪৫ মিনিটের হাঁটা পথ প্রাচীন কালভৈরবী মন্দিরে। ওখান থেকে হেঁটে ঝিরিপথ ধরবেন।
ঝরঝরি ট্রেইল- সীতাকুন্ড ও মিরসরাই অঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর ট্রেইল এটি। এটি মিরসরাই সীতাকুন্ড অঞ্চলের সবচেয়ে লম্বা ট্রেইল। তবে এটি অপরিচিত ট্রেইল। অপূর্ব সব ঝর্ণা ক্যাসকেড এবং ঝিরিপথের সমন্বয়ে এই ট্রেইল।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে নামবেন সীতাকুন্ডের পন্থিছিলা বাজারে। ওখান থেকে হেঁটে পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে আধা ঘন্টা হেঁটে ঝিরিপথ ধরবেন।
কমলদহ ট্রেইল - এই ট্রেইলটা এককথায় অসাধারণ। এই ট্রেইলে পাবেন বড় কমলদহ ঝর্ণা সহ মোট চারটি ঝর্ণা। এই ট্রেইলের ঝর্ণাই বড়। বর্ষায় গেলে অপার্থিব সৌন্দর্য দেখতে পাবেন তবে এটি বিপজ্জনক বেশ।
যেভাবে যাবেন - ঢাকা থেকে সীতাকুন্ডের বড় দারোগারহাট নামবেন। এখান থেকে একটু হেঁটে পূর্ব পাশের রাস্তা ধরে ঝিরিপথ ধরবেন।
.সুপ্তধারা সহস্রধারা ট্রেইল - সীতাকুন্ড রুটের সবচেয়ে সহজ ট্রেইল এটি তবে সুন্দর। এখানে পাবেন সুপ্তধারা এবং সহস্রধারা ঝর্ণা সহ কয়েকটি কুম ও ক্যাসকেড পাবেন।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড ইকোপার্কের রাস্তার মাথা থেকে ইকোপার্কে ঢুকলেই দেখিয়ে দিবে।
.সহস্রধারা মূল ট্রেইল- এটিও আগের ট্রেইলের মতো সহজ তবে আগের ট্রেইল থেকে সুন্দর। এই ট্রেইলে পাবেন প্রাচীন এক মন্দির, সহস্রধারা মূল ঝর্ণা, সহস্রধারা লেক এবং বুদবুদকুন্ড।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড বাজারে নামবেন। এখান থেকে ছোট দারোগাহাটের লোকাল সিএনজি পাবেন।
বি:দ্র:- প্রকৃতি আমাদের সম্পদ। দয়া করে প্রকৃতিতে যত্রতত্র অপচনশীল ময়লা ফেলবেন না। আপনি যেমন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, আপনার পরবর্তী প্রজন্ম যেন অধিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
সৈকতে একসঙ্গে সাগর, নদী, পাহাড় আর সমুদ্রের দ্বীপ দেখতে চান?
বাংলাদেশের একটি জায়গায় তা সম্ভব। চলে আসুন কক্সবাজারে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি.মি.। সৃষ্টিকর্তা যেন রূপসী বাংলার সব রূপ ঢেলে দিয়েছে বালুর আঁচলে । কক্সবাজর শহরে ঢুকতেই কানে বাজবে উত্তাল সাগরের গর্জন।
পশ্চিম দিকে উঁকি দিলে নজরে পড়বে বিশাল সাগর। এছাড়া এইখানে দেখতে পাবেন বিস্তীর্ণ বেলাভূমি, সারি সারি ঝাউবন, সৈকতে আছড়ে পড়া বিশাল ঢেউ। সকালবেলা দিগন্তে জলরাশি ভেদকরে রক্তবর্ণের থালার মতো সূর্য। অস্তের সময় দিগন্তের চারিদিকে আরো বেশি স্বপ্নিল রঙ মেখে সে বিদায় জানায়।
নরম বালুচরে নেমে দেখবনে লাল রঙের রাজকাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ, গভীর সাগরে মাছ ধরে জেলেদের ফিরে আসা। সাগরের বিশাল মায়াবী গোধূলী ও সুর্যাস্ত, রাতের নিস্তব্ধতায় এক অন্য জগতে হারিয়ে যাবেন। সূর্য্যস্নান কিংবা সমুদ্রস্নানে নিজেকে বিলীন করে দিন নীলাভ প্রকৃতিতে।
খোলা জীপে, স্পীড বোটে বা ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো আর সমুদ্রের বালির বিছানায় দাঁড়িয়ে শামুক-ঝিনুকের সাখে লোকোচুরি খেলতে খেলতে উপভোগ করুন অনাবিল আনন্দ। কক্সবাজার নাজিরার টেক থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত উক্ত বীচ।
কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে উক্ত বীচ অবস্থিত। বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার তাইতো নব বধুরুপে সেজে আপনার পথ পানে চেয়ে আছে ।
এখানকার সমুদ্রের পানিতে গোসল, সূর্যাস্তের মনোহারা দৃশ্য দেখেও ভালো লাগবে। কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণের শুরুটা হতে পারে লাবনী পয়েন্ট থেকে। লাবনী বিচ ধরে হেঁটে হেঁটে পূর্ব দিকে সোজা চলে যাওয়া যায় হিমছড়ির দিকে। যতোই সামনে এগুবেন ততোই সুন্দর এ সৈকত। সকাল বেলা বের হলে এ সৌন্দর্যের সাথে বাড়তি পাওনা হবে নানান বয়সী জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য।
এখানে উপভোগ করুণ আর্ন্তজাতিক মানের হোটেল মোটেলের আতিথেয়তা ও সেবা। উত্তাল সাগরে ঢেউয়ের ওপর ছেলেমেয়েদের জলক্রীড়া (সাফিং) দেখে মন সতেজ করতে হলে যেতে হবে কলাতলী পয়েন্টে।
সৈকতের পাদদেশেই বিশাল ঝাউবাগান। উচুঁ পাহাড়ের ওপর ৩০০ বছর আগে স্থাপিত জাদিরাম মন্দির, ক্যাং, বার্মিজ মার্কেট মনোমুগ্ধকর রাডার ষ্টেশন, লাইট হাউজ এবং নাজিরাটেক শুটকিপল্লী ও ঝিনুক মার্কেট ঘুরে আসতে পারেন।
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের জনপ্রিয় পয়েন্ট গুলো হল:
ঝাউতলা পয়েন্ট
লাবনী পয়েন্ট
সুগন্ধা পয়েন্ট
কলাতলি পয়েন্ট
হিমছড়ি পয়েন্ট
ইনানি বিচ
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে বাসে অথবা ফ্লাইটে করে কক্সবাজার যেতে হবে। কক্সবাজার শহরের পশ্চিম পাশেই সমুদ্র সৈকত।
কখন যাবেন:
কক্সবাজারের পীক সিজন বলে অক্টোবর থেকে মার্চ। এ সময়টায় বৃষ্টি কম হওয়ায় বেশী ট্যুরিস্ট আসে। এ ছাড়াও শীত থাকাতে বীচগুলো বেশী উপভোগ্য লাগে, কিন্তু ভীড়টাও বেশী থাকে। অফপিক সীজন থাকলেও দুই ঈদের পরে এবং তিন দিনের বন্ধে অনেক ট্যুরিস্ট থাকে। এ সময়টায় বুকিং না দিয়ে যাওয়াটা ঠিক নয়। অফসিজনে হোটেলগুলো ৩০% থেকে ৬০% পর্যন্ত ছাড় দিয়ে থাকে। এ ছাড়াও বর্ষার সময়টা ঢেউ গুলো অনেক বড় থাকে। সেন্টমার্টিনের জাহাজ চলে সাধারণত অক্টোবর থেকে এপ্রিল। সেন্টমার্টিন জাহাজে যাবার ইচ্ছা থাকলে ওই সময়টায় যেতে পারেন। এবছর (২০১৫) কোরবানীর ঈদের পর থেকে জাহাজ চালু হবার কথা (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫).
কিভাবে যাবেন:
কক্সবাজারের সরাসরি গাড়ী চলে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে। যেমন, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রংপুর ইত্যাদী। ঢাকা থেকে নন এসি গাড়ী আছে অনেকগুলো। শ্যামলী, টিআর, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, সৈাদিয়া, ইত্যাদী। ভাড়া পড়বে ৮০০ টাকা। আর যদি এসি তে যান আছে গ্রীন লাইন, সৈাদিয়া, দেশ ট্রাভেলস, টিআর, সোহাগ ইত্যাদী। ভাড়া পড়বে ১৬০০(ইকোনমি ক্লাস)-থেকে ২০০০ টাকা (বিজনেস ক্লাস)। সময় লাগতে পারে ১২-১৪ ঘন্টার মত। এছাড়া সেন্টমার্টিন পরিবহন বলে একটি সার্ভিস চালু আছে যেটা চলে টেকনাফ পর্যন্ত। নন এসির ক্ষেত্রে ইউনিক এবং শ্যামলীর সার্ভিস ভালো এবং এসির ক্ষেত্রে দেশ এবং টিআর ট্রাভেলসের সার্ভিস ভালো।
চট্টগ্রাম থেকে প্রতি ঘন্টায় কক্সবাজারের গাড়ী পাওয়া যায় বহদ্দার হাট থেকে। অধিকাংশ গাড়ীও অত্যন্ত লোকাল। ভালো সার্ভিস দেয় এস আলম ও সৈাদিয়া, ছাড়ে গরীবুল্লাহ শাহ মাজার, দামপাড়া থেকে।
এছাড়া বিমানেও যেতে পারবেন। রিটার্ণ ভাড়া ৮,০০০ থেকে শুরু করে ১২,০০০ টাকা । ইউএস বাংলা, নোভো এয়ার, বাংলাদেশ বিমান যায় কক্স বাজার। ইউনাইটেড এয়ারের অবস্থা ভালোনা, এতে ভ্রমণ না করায় শ্রেয়। কম খরচে যেতে চাইলে বিমান সবচেয়ে ভালো মাধ্যম, কিন্তু টিকেট কিনতে হবে আগে।
অনেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম যেয়ে তারপর সেখান থেকে কক্স বাজার যেতে চান। সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে তূর্ণা-নিশীথা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রাম মেইলে চট্টগ্রাম আসতে হবে। চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের উল্টা পাশেই বিআরটিসির কাউন্টার থেকে বিআরটিসির বাসে যেতে পারেন কক্সবাজার। অথবা সিএনজি নিয়ে নতুন ব্রীজ বা দামপাড়া যেয়ে কক্সবাজারের গাড়ীতে উঠতে হবে। ট্রেনের বিস্তারিত সময়সূচী এবং ভাড়া জানতে পারবেন www.railway.gov.bd সাইট থেকে।
থাকার ব্যবস্থা:
বর্তমানে কক্সবাজারে হোটেলগুলো প্রায় ১৫০,০০০ জন ধারণ ক্ষমতা আছে। সুতারাং বুক না দিয়ে গেলেও হোটেল পাবার সম্ভাবনা থাকে। তবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এবং নিউ ইয়ারের প্রারম্ভে এ ঝুকিটা নেয়া ঠিক হবেনা। কক্স বাজার হোটেল/মোটেল/রিসোর্ট গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় দামানুসারে।
৬০০০-১০.০০০: মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওশেন প্যারাডাইজ, লং বীচ, কক্স টুডে।
৩,০০০-৬,০০০: সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রীফ, নিটোল রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, বীচ ভিউ, সী ক্রাউন, ইউনি রিসোর্ট।
১,০০০ - ৩,০০০: উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট।
এর চেয়ে কম দামেও পাওয়া যায় (যেমন জিয়া গেস্ট হাউজ), খোজাখুজি করে দেখতে পারেন। কক্সবাজার শহরেও কিছু কমদামের হোটেল আছে।
মনে রাখবেন হোটেল ভাড়া অফসিজনে অর্ধেকেরও বেশী ছাড়ে পাবার সম্ভাবনা থাকে। সুযোগ থাকলে কক্সবাজার নেমে একজন যেয়ে হোটেলের সাথে দরদাম করে হোটেল খুজে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়। রিকশাওয়ালা বা সিএনজিওয়ালার পরামর্শে হোটেল খোজাটা উচিত নয়। এখন প্রায় সব হোটেলরই ফেইসবুক পেইজ বা ওয়েবাসাইট থাকে, সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে আগে যোগাযোগ করেও যেতে পারেন। কিন্তু ডিসেম্বরের ১৫ থেকে জানুয়ারী ১৫ তারিখ পর্যন্ত বুকিং দিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। এছাড়া কর্মদিবসগুলোতে গেলে উইকএন্ডের তুলনায় বেশী ছাড়া পাওয়া যাবে।
হোটেলের পাশাপাশি কিছু ফ্ল্যাটও ভাড়া পাওয়া যায়। আপনি যদি বড় পরিবার নিয়ে যান, এ ধরণের ফ্ল্যাট আপনার জন্য বেশী উপযোগী হতে পারে। ২/৩/৪ বেড রুম এসি/নন এসি, রান্নঘর সহ এ ধরণের ফ্ল্যাটের ভাড়া পড়বে ২,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা প্রতিদিন। এরকম একটি ফ্ল্যাট বাড়ীর ফোন নাম্বার (আলফা ওয়েব, কলাতলি রোড ০১৭১৫৬৮৩৯৫৬), ভয়েজার (০১৬১৬১০০৪০০)। এ ছাড়াও হোটেল আইল্যান্ডিয়ার গলিতে আরও অনেকগুলো আছে, খোজাখুজি করে দেখতে পারেন।
খাওয়া:
কক্সাজারে খাওয়ার মত অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট আছে। বাজেট রেস্টুরেন্টের মধ্যে ঝাউবনের নামই সবার আগে আসে। এধরণের বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট আছে, খাবারের মান মোটামুটি একই। রোদেলা, ধানসিঁড়ি, নিরিবিলি। মেনু অনুসারে দামের তালিকা নিচে দেওয়া হল। সিজনে কম/বেশী হতে পারে:
ভাত: ২০-৪০ টাকা
মিক্সড ভর্তা: ৭৫/১৫০/৩০০ (৮-১০ আইটেম)
লইট্যা ফ্রাই: ১০০-১২০ (প্রতি প্লেট ৬-১০ টুকরা)
কোরাল/ভেটকি: ১৫০ (প্রতি পিচ)
গরু: ১৫০-২০০ (২ জন শেয়ার করতে পারবেন)
রপচাঁদা ফ্রাই/রান্না: ৩০০-৪০০ (বড়, ২জন খাওয়ার মত)
ডাল: ৩০-৬০
বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য নাম পৈাষী । হোটেল জোন থেকে কিছুটা দুরে শহরে এর অবস্থান। রিকশা/অটো ৫০ টাকা নিবে। দাম মোটামুটি একই। কিন্তু খাবার ভালো হবার কারণে ভিড়টা খুব বেশী থাকে।
এছাড়া হান্ডি রেস্তারায় হায়দারাবদী বিরাণী খেতে পারবেন ২০০-২৫০ টাকায়। অবস্থান লাবণী পয়েন্টে। কেএফসিও আছে, যদি কারো খেতে ইচ্ছা করে।
দর্শনীয় স্থান:
সৈকত: কক্সাবাজারের তিনটি সৈকত মোটামটি বিখ্যাত। লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী বীচ। কলাতলী বীচে ভিড় তুলনামূলক কম থাকে আর সবচেেয়ে বেশী ভিড় থাকে সুগন্ধায়। সময় নিয়ে তিনটা বীচে হেটে দেখতে পারেন। গোসল করলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন ভাটার সময় বা লাল পতাকা দেয়া অবস্থায় পানিতে নামবেননা। বীচে চেয়ার ভাড়া পাওয়া যায় ৫০-৬০ টাকা ঘন্টা। একই ভাড়ায় রাবার টিউবও পাবেন।
বার্মিজ মার্কেট: শহরের বার্মিজ মার্কেট পর্যটকদের একটি প্রিয় গন্তব্য। এখানে বার্মা এবং চায়না (!) থেকে আসা অনেক কিছু পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের আচার, কাপড় চোপড়, গিফট আইটেম।
Saint martin: -----------------------------------------
হিমছড়ি: কক্সবাজার হোটেল জোন থেকে হিমছড়ির দূরত্ব ১৮ কিমির মতে। সিএনজি ভাড়া নিতে পারে ৩০০ টাকা। এছাড়াও প্রবেশ ফি রয়েছে ৩০ টাকা। পাহাড়ের উপর থেকে চমৎকার সমুদ্রের ভিউ দেখা যায় বলে এ জায়গাটি অনেক জনপ্রিয়। মানুষ বেশী থাকলে জীপ ভাড়া করেও যেতে পারেন। জীপ ভাড়া নিতে পারে ৮০০-১০০০ টাকা।
লাবণী পয়েন্ট
কক্সবাজার শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী পয়েন্ট কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় আছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ।
হিমছড়ি
হিমছড়ি কক্সবাজারের ১৮ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ভঙ্গুর পাহাড় আর ঝর্ণা এখানকার প্রধান আকর্ষণ। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে বামদিকে সবুজঘেরা পাহাড় আর ডানদিকে সমুদ্রের নীল জলরাশি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করে। বর্ষার সময়ে হিমছড়ির ঝর্ণাকে অনেক বেশি জীবন্ত ও প্রাণবন্ত বলে মনে হয়। হিমছড়িতে পাহাড়ের চূড়ায় একটি রিসোর্ট আছে যেখান থেকে সাগরের দৃশ্য অপার্থিব মনে হয়।অর্থাৎ এখান থেকে সম্পূর্ণ সমুদ্র এক নজরে দেখা যায়। হিমছড়ির প্রধান আকর্ষণ এখানকার ক্রিসমাস ট্রি। সম্প্রতি হিমছড়িতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট।
ইনানী সমুদ্র সৈকত
দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে সৈকত সংলগ্ন আরও অনেক দর্শনীয় এলাকা রয়েছে যা পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণের বিষয়। সৈকত সংলগ্ন আকর্ষণীয় এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনানী সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দক্ষিণে অবস্থিত। অভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে রাস্তায় মাত্র আধঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। পরিষ্কার পানির জন্য জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্রস্নানের জন্য উৎকৃষ্ট বলে বিবেচিত।
দরিয়ানগর পার্ক:
পাহাড়, সমুদ্র আর সুর্যের মিলনের এ অপরূপ দৃশ্য বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের নিকটবর্তী দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্রের। কক্সবাজার শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে মাত্র আট কিলোমিটার পূর্বদিকে দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্র। পশ্চিমে বিশাল বঙ্গোপসাগর, পূর্বে উঁচু পাহাড়। মাঝখানে কক্সবাজার-টেকনাফ পিচঢালা সড়ক। এই পথ ধরে এগিয়ে গেলেই সবুজে ঘেরা বড়ছেড়া গ্রাম। এই গ্রামের ৫৩ হেক্টর জমির ওপরে উঁচু-নিচু পাঁচটি পাহাড়ের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে খানিক দূরে হিমছড়ি বা ইনানী বিচে যাওয়ার আগেই সমুদ্র আর পাহাড়ের এই মিলনস্থল। পাহাড়ের চূড়া থেকে প্রায় সাতশ’ ফুট গভীরে একটি প্রাচীন গুহাও রয়েছে এখানে। পর্যটকরা অনায়াসে পাহাড়ের সেই ভিন্ন রূপটা উপভোগ করতে পারেন। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণ ও আনন্দ খানিকটা বাড়িয়ে দিতে পারে এই দরিয়ানগর। প্রকৃতি তার দু’হাত ভরে সৌন্দর্য বিতরণ করেছে দরিয়ানগরকে।
ডুলহাজারা সাফারি পার্ক:
এটি কক্সবাজার থেকে ৪১ কিলোমিটার পূর্বে চট্রগ্রাম- কক্সবাজার হাইওয়ের পাশে অবস্থিত। কক্সবাজার শহর থেকে আপনি লোকাল মাইক্রোবাস অথবা চকরিয়াগামী কক্স স্পেশাল বাসে করে সাফারি পার্ক এর প্রবেশ মুখে পৌছাতে পারেন। ভাড়া ৬০-৭০ টাকা। সাফারি পার্ক এর প্রবেশমূল্য ২০ টাকা। মোটামুটি ১:৩০-২ ঘন্টা হাটলে পুরোটা ঘুরে দেখতে পারেন। বাঘ, সিংহ, কুমির, ভাল্লুক, হরিণ, হাতি, বানর, হুনুমান, খরগোশ, অজগর ছাড়াও প্রায় ১৫০ প্রজাতির জীবজন্তু আছে এই পার্কে। পার্কের ভিতরে একটি লেক ও রয়েছে। পার্কের ভিতরের মনোরম দৃশ্য আপনার চোখ জুড়াবে নিঃসন্দেহেই।
মহেশখালী:
কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে ফিশারী ঘাটে। হোটেল জোন থেকে টমটম বা রিক্সায় যেতে পারেন। টমটমের ভাড়া ১০০ টাকা নিবে। ফিশারী ঘাট থেকে স্পীডবোট ছাড়ে। শেয়ারে গেলে ৭৫ টাকা পড়বে প্র্রতি জন। আর দল বড় হলে রিজার্ভ নিতে পারেন, সেক্ষেত্রে পড়বে ১৮০০-২০০০ টাকা। সর্বোচ্চ ১১ জন যেতে পারবেন এক স্পীড বোটে। মহেশখালীর মূল আকর্ষণ আদিনাথ মন্দির। এছাড়াও আরো কয়েকটি বৈাদ্ধ মন্দির আছে। সেগুলোও দেখতে পারেন। আদিনাথ মন্দিরের উপরের পাহাড়, ম্যানগ্রোভ বন ও সমুদ্রের দৃশ্যটা অনেক সুন্দর।
সোনাদিয়া:
টেকনাফঃ টেকনাফের ভ্রমণের শুরু হয় নাফনদী থেকে। নদীর কূল ধরে বেড়ে উঠেছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। শ্বাসমূলের সঙ্গে পানির বোঝাপড়াটাও দারুণ। এছাড়াও দেখার মত স্থান হতে পারে মাথিনের কুপ ,টেকনাফ শহরের প্রান কেন্দ্রে নাফ নদীর পাশে টেকনাফ পুলিশ ফাঁড়ির চত্তরে এই মাথিনের কূপ ।
এছাড়া রয়েছে টেকনাফের দমদমিয়ায় অবস্থিত নেচার পার্কে। গর্জন, তেলসুর, বহেড়া, চাপালিশ, হরীতকীসহ নানা গাছে ঘেরা ঘন সবুজ বন। এখানে ট্রেকিং পথে মিলবে নানা রকমের পাখি আর বন্য প্রাণীর, যা পুরোটাই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে।
টেকনাফে থাকার জন্য মিল্কই হোটেল ভালো হবে প্রাইজ দামাদামি করে নিলে ২২০০ এর মধ্যে নিতে পারবেন ৪ জনের জন্য ।
শীলখালি গর্জন ফরেস্ট:
রামু বৈা্দ্ধ মন্দির:
প্যারা সেইলিং:
প্যারা সেইলিং করার জন্য আপনাকে যেতে হবে দরিয়ানগর। হিমছড়ির আগে শহরের বাইরেই এর অবস্থান। প্রতি ১৫ মিনিট প্যারাসেইলিং এর জন্য খরচ হবে ১,৫০০ টাকা। তাদের পেইজ লিংক: (https://www.facebook.com/funfestbd/...)
টিপস:
জামা কাপড়:
কক্সবাজারে ঘোরার জন্য থ্রি কোয়ার্টার এবং টি শার্ট বেশী জনপ্রিয় পোশাক। কালো কোন পোশাক না পরে উজ্জল বা হালকার রংগের পোশাক পরা উচিত। স্যান্ডেল পরের মত স্যান্ডেল নিয়ে যাবেন অথবা ১৫০-২০০ টাকা খরচ করে কিনে নিবেন। এছাড়াও সানগ্লাস, হ্যাট/ক্যাপ নিতে ভুলবেনা। প্রয়োজনে সানস্ত্রিন ক্রিম নিন। হোটেলে সুইমিং করার ইচ্ছা থাকলে সুইমিং কস্টিউমও নিতে পারেন। শীতকালে বীচ এলাকাগুলোতে অন্য এলাকার চেয়ে কম শীত পড়ে। তবুও শীতের কাপড় নিয়ে যাবেন।
স্বল্প খরচে কক্সবাজার ঘোরার জন্য কিছু পরামর্শ:
১. নন-এসি বাসে রাতে ভ্রমণ করুন। রাতের তাপমাত্রা সাধারণত একটু কম থাকে। এছাড়া রাতে ভ্রমনের কারণে এক রাতের হোটেল ভাড়া বেচে যাবে। নন-এসির ক্ষেত্রে ইউনিক পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন দেখতে পারেন, এদের সিট এবং ড্রাইবাররা ভালো।
২. সাধারণ ট্রাভেল ব্যাগের পরিবর্তে ব্যাপকপ্যাক মানে পিঠে ঝুলানো যায় এমন ব্যাগ বহন করুন। সাধারণত ট্রলি ধরণের ব্যাগ ব্যবহারের কারণে আপনার চলাচলের সীমাবদ্ধতা তৈরী হয়। ফলে অপ্রয়োজনীয় খরচ বেড়ে যায়।
৩. বীচ থেকে কিছুটা দূরে হোটেল ঠিক করবেন। গলির ভিতরে হলেও কোন সমস্যা নেই। প্রথমে একজন যেয়ে দরাদরি করে রুম ঠিক করুন, পরে বাকীদের ডেকে আনুন। ভাড়া অর্ধেক হয়ে যাবে। রিক্সাওয়ালা, অটো/সিএনজি চালকদের পরামর্শে হোটেল নিবেন না, কারণ তারা হোটেল থেকে কমিশন পেয়ে আপনাদের বিভ্রান্ত করবে।
৪. বীচ থেকে হেটে হেটেই আসা যাওয়া করুন। রিকশা বা অটো নিতে হলে দরদাম করে উঠুন।৫. খাবারের ক্ষেত্রে কয়েকজন থাকলে মূল আইটেম গুলো ভাগ করে খান। উদাহরণ: ৪ জনের জন্য ১. ভাত ৪ টা (১২০ টাকা) ২. হাফ মিক্সড ভাজি-ভর্তা (৮০ টাকা) ৩. লইট্যা মাছ ১ টা (১২০ টাকা) ৪. ডাল ১ টা (৩০ টাকা) ৫. গরু/মুরগী/মাছ ১ টা (১২০ টাক) সব মিলে গড়ে প্রায় ১২০ টাকা করে প্রতিজন।
৬. ভুলেও রপচান্দা (আসলে কালি চান্দা) বা চিংড়ি মাছ অর্ডার করবেন না।
৭. হিমছড়ি যেতে হলে কলাতলি মোড় থেকে লোকাল অটোতে উঠে যান। যতটা মনে পড়ে ২০ টাকা করে ভাড়া। আর ৫/৬ জন হলে একটা দরাদরি করে একটা অটো ঠিক করে নেন।
৮. কলাতলি মোড় থেকে লোকাল অটো বা জীপে করে ইনানিও যেতে পারেন।৯. রাতে গাড়ী থাকলে দুপুরের আগে চেক আউট টাইম অনুসারে হোটেল ছেড়ে দিন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলে আপনার ব্যাগ হোটেলে চেক আউট লাগেজ হিসেবে রাখার ব্যবস্থা করে আপনি ঘুরে বেড়ান।
১০. যদি সম্ভব হয় কর্মদিবস গুলোতে যাবেন (রবি থেকে বৃহস্পতি), সে সময় ভিড় কম থাকবে, হোটেল ভাড়াও কম থাকে। তিন দিনের বন্ধ, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ এগুলো এড়িয়ে যাবেন।
নদী পথে কক্সবাজার যেতে চান ইহা একটি adventurous tour
ঢাকা সদরঘাট টু হাতিয়া টু চট্রগ্রাম টু কুতুবদিয়া টু কক্স বাজার। চট্রগ্রাম ফিরিঙ্গি বাজার ঘাট থেকে ট্রলার ছারে কুতুবদিয়ারর উদ্দেস্যে সকাল ৭.০০ টায়। নাবিক জাহাঙ্গীর 01982241055 উনার কাছে থেকে কুতুবদিয়া টু কক্সবাজার ট্রলার এর তথ্য পাবেন। একি কোম্পানির ট্রলার আছে।
ঢাকা থেকে :
ঢাকা সদরঘাট থেকে বিকাল ৫টার সময় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত তিনতলা বিশিষ্ট লঞ্চ হাতিয়া তমরদ্দি ঘাটের উদ্দেশ্য যাত্রা করে পরের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় পৌছে। ভাড়া নেয়া হয় সাধারণ যাত্রী ১৫০ টাকা, কেবিন যাত্রী ৪০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা বা তার চেয়ে কিছু কম বেশি হতে পারে। তমরদ্দি ঘাটা থেকে একই ধরনের আর একটি লঞ্চ দুপুর সাড়ে বারোটায় ঢাকার সদর ঘাটের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করে পরদিন ভোর পাচঁটায় পৌছে। যোগাযোগের জন্য মোবাইল:- ০১৭১১-৩৪৯২৫৭ (পনামা) এবং টিপু :- ০১৭১১-৩৪৮৮১৩।
চট্টগ্রাম থেকে :
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে সপ্তাহে তিন দিন B.I.W.T.A. এর স্টীমার এম আলাউদ্দিন, এম. ভি বার আউলিয়া এবং এম. বি মনিরুল হক হাতিয়া নলচিরা ঘাট পর্যন্ত চলাচল করে। এ সকল স্টীমার চট্টগ্রামর সদর ঘাট থেকে সকাল ৯টা যাত্রা শুরু করে একই দিন বিকাল ৪টায় নলচিরা ঘাট পোঁছে। হাতিয়া নলচিরা ঘাট থেকে পরদিন সকাল ৯টায় চট্টগ্রামের দিকে যাত্রা শুরু করে। বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম সদর ঘাট পৌঁছে। BIWTC ফোন নং:- ৬১৩৩৫৮, ৬১৭৯৭৬। বর্তমান চট্টগ্রাম হতে হাতিয়ার সাধারণ যাত্রী ভাড়া জনপ্রতি ১০৫টাকা, কেবিন প্রথম শ্রেণী ৬০০টাকা,দ্বিতীয় শ্রেণী ৩০০টাকা
সার্কিট হাউস
জেলা পরিষদ ভবনের পশ্চিম দক্ষিণে পাহাড়ের চূঁড়ায় মনোরম পরিবেশে হিলটপ সার্কিট হাউসের অবস্থান। এর চূঁড়া থেকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ ও পুরো শহর অবলোকন করা যায়। বাংলাদেশ এর অধিকাংশ জেলায় ১ টি সার্কিট হাউস থাকলেও কক্সবাজার জেলায় ২ টি সার্কিট হাউজ রয়েছে। পাহাড়ের উপরে অবস্থিত সার্কিট হাউস এর নাম হিল টপ সার্কিট হাউস এবং পাহাড়ের নিচে অবস্থিত সার্কিট হাউস এর নাম হিল ডাউন সার্কিট হাউস। কক্সবাজার জেলা পর্যটন নগরী হওয়ায় প্রায় সারা বছরই সার্কিট হাউস এর রুম পরিপূর্ণ থাকে।
নেজারত ডেপুটি কালেক্টর-
মোবাইল নাম্বার-০১৫৫০৬০০৪০৬
আবাসন সুবিধা সংক্রান্ত তথ্যাদি
হিল টপ সার্কিট হাউসঃ
হিল ডাউন সার্কিট হাউসঃ
রামুর রাবার বাগান
রম্যভূমির রামুর একমাত্র পর্যটন স্পট রাম’রু রাবার বাগান ও রাবার বাগানের রেস্ট হাউস। রেস্ট হাউসের চর্তুদিকে আরাকান সড়কের উভয় পাশের বিশাল এলাকার জুড়ে রাবার বাগান অবস্থিত। একদা এখানে পর্যটকদের পিকনিক আয়োজন চোখে পড়লেও ইদানিং বাগানের শ্রী হ্রাসের কারণে তেমনটি চোখে পড়ে না। ১৯৬০-৬১ সালের দিকে সরকারি বনভূমির উপর রাবার বাগানটি সৃজিত হয়। বর্তমানে বাগানের বিস্তৃতি ২,৬৮২ একর। তন্মধ্যে ১,১৩০ একর এলাকা থেকে লিকুইড বা কষ সংগ্রহ করা হয়। রামুর রাবার বাগানে উৎপাদনক্ষম গাছ আছে প্রায় ৫৮ হাজার। এসব গাছ থেকে বছরে প্রায় আড়াই লক্ষ কেজি রাবার উৎপাদন হয়। দেশে রামুর রাবার বাগান ছাড়াও চট্টগ্রামে ৭টি, সিলেটে ৪টি ও মধুপুরে ৫টি রাবার বাগান রয়েছে। বাগানটি বর্তমানে স্বায়িত্বশাসিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থা’র (BFIDC) এ বাগানটিসরকারি উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে বলে রামুবাসীরা মনে করেন।
রামুর ঐতিহ্যবাহী এ রাবার বাগান আজ দেশের অন্যতমস্থান দখল করে নিয়েছে। রামু রাবার বাগানের জন্য বিখ্যাত এ বাক্যটি পাঠ্যপুস্তকেও পড়ানো হয়। প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক রামু রাবার বাগানপরিদর্শন করতে আসে। পাহাড় আর সমতলের অপূর্ব মিলনের দৃশ্য উপভোগ করে মুগ্ধহন ভ্রমনপিপাসুরা। এখানে বাগান র্কতৃপক্ষের একটি দৃষ্টিনন্দন বিশ্রামাগার(রেষ্ট হাউস) রয়েছে। রামু রাবার বাগানকে ঢেলে সাজানো হলে পর্যটন শিল্পবিকাশে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। রামু চৌমুহনী ষ্টেশন থেকে মাত্রদুই কিলোমিটার উত্তরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এ বাগানেরিক্সা, টেক্সী বা অন্যান্য যানবাহন নিয়ে যাওয়া যাবে।
কীভাবে যাবেন রামুর রাবার বাগানে?
কক্সবাজার শহর থেকে ট্যাক্সি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা বা টমটম নিয়ে যেতে পারেন রামুর রাবার বাগান।
ভাড়া হবে জনপ্রতি ৩০ টাকা। আর রিজার্ব হলে ১৫০ টাকা।
টেকনাফ
টেকনাফ উপজেলা বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। এটি বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত। টেকনাফ উপজেলার পূর্ব প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে নাফ নদ; এই নাফ নদের থেকেই এই অঞ্চলটির নামকরণ হয়েছে।
অবস্থান ও আয়তন
টেকনাফের অবস্থান ২০.৮৬৬৭° উত্তর এবং ৯২.৩০০০° পূর্ব। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। মোট আয়তন ৩৮৮.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের সর্বদক্ষিণ প্রান্তসীমা এবং এ উপজেলার সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণ প্রান্ত। টেকনাফ উপজেলার উত্তরে উখিয়া উপজেলা, পূর্বে নাফ নদ ও মায়ানমার সীমান্ত এবং দক্ষিণ ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর।
প্রশাসনিক এলাকা
টেকনাফ উপজেলায় এ উপজেলায় ১৩৩টি গ্রাম, ১২টি মৌজা, ৬টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা রয়েছে।
ইউনিয়নগুলো হচ্ছেঃ * বাহারছড়া, * হ্নীলা, * সেন্টমার্টিন দ্বীপ, * সাবরাং, * টেকনাফ ও * হোয়াইক্যং।
ইতিহাস
টেকনাফ পূর্বে কক্সবাজার জেলার একটি থানা ছিল। ১৯৮৩ সালে এটিকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
জনসংখ্যার উপাত্ত
টেকনাফ উপজেলার একটি বড় অংশ বনাঞ্চল বিধায় বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকা থেকে এ উপজেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব তুলনামূলক কম। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২০০,৬০৭ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৫১৬ জন। জনসংখ্যার ৫২.৪% পুরুষ এবং ৪৭.৬% মহিলা।
অর্থনীতি
এখানকার অর্থনীতি বেশ ভাল। দেশ-বিদেশ থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-টেকনাফ রুটে এই উপজেলার সীমান্তে সেন্টমার্টিনদ্বীপে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটকের আগমন, টেকনাফ বন্দর, নাফ নদী-বঙ্গোপসাগর থেকে মূল্যবান মাছ আহরণ, খনিজ লবন, পান সুপারীর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন। পাহাড় ও নদী-সাগর ঘেরা টেকনাফে সুন্দর লবন মাঠ এবং বড় বড় মৎস্য খামার আছে। এই স্থান কৃষি কাজ, লবণ চাষ ও মাছ চাষ করার জন্য বেশ উপযোগী।
দর্শনীয় স্থানসমূহ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ ও সর্বদক্ষিণের জনবসতি সেন্টমার্টিন দ্বীপ টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত। এছাড়া টেকনাফ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, টেকনাফ সমুদ্রসৈকত, পৌরসভার নিকটস্থ থানা প্রাঙ্গণে মাথিনের কূপ, বাংলাদেশ-মায়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাট, টেকনাফ ন্যাচার গেম রিজার্ভ, শিলখালী চিরহরিৎ গর্জনগাছ বাগান, মারিশবনিয়া সৈকত, কুদুমগুহা অন্যতম।
মাথিনের কূপ, টেকনাফ
ইতিহাসঃ
যাতায়াত ব্যবস্হার উন্নতি না হবার ফলে, বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে টেকনাফ পরিচিত ছিল অতি ভয়ংকর ও দূর্গম এলাকা হিসেবে।
সে সময় টেকনাফ ছিল একটি ছোট বানিজ্যিক এলাকা। ব্যবসায়ীরা বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাল, কাঠ, তামাক, তাজা এবং শুকনো মাছ এখানে জড়ো করতো। বার্মা থেকেও বাঁধাহীনভাবে অবৈধ পথে এখানে চাল আসত। এখানকার গোত্রের ভিতর, রাখাইন সম্রাদায়ের লোকজনই বেশী ছিল। জল দুস্যুতা মাত্রারিক্ত বৃদ্ধির কারনে এবং ব্যবাসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য তৎকালীন সরকার টেকনাফে একটি পুলিশ ফাঁড়ী স্হাপন করে, যার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ধীরাজকে কলকাতা থেকে টেকনাফে বদলী করা হয়।
কলকাতা থেকে দুর্গম টেকনাফে আসা তার জন্য রীতিমত অসম্ভব ছিল। শিলাইদহ থেকে গোয়ালন্দ প্রথমে ট্রেনে, তারপর গোয়ালন্দ থেকে চাঁদপুর হয়ে চট্রগ্রাম পর্যন্ত ষ্টিমারে। সেখান থেকে স্টীম ইঞ্জিন ট্রেনে চেপে চট্রগ্রামের বা’টালি ষ্টেশন।
সবুজ পাহাড়ে ঘেরা টেকনাফ থানা-অদূরে সমুদ্রের নীল জলরাশি। থানায় তার তেমন কোন কাজ কর্ম ছিলনা। অনেকটা এখানে সেখানে ঘুরে ফিরে কাটাতেন। থাকতেন থানার আধাপাকা ঘরের একটি কক্ষে।
তখন শীতকাল, সাগর শান্ত ছিল। ঐ বছ্র সাগরে মাছ প্রচুর পরিমানে ধরা পরায় জেলেরাও অতিরিক্ত সময় কাজ করে। কলকাতা ছেড়ে এই প্রথম ধীরাজ দূরে আছে। সহসাই বাড়ির কথা তার খুব মনে পরে। ঘরে তার বৃদ্ধ বাবা-মা।
সেই সময় টেকনাফে সুপেয় পানির খুব অভাব ছিল। একদিন ভোরে একাধিক নারী কন্ঠের অস্পষ্ট মৃদু গুঞ্জনে ধীরাজের ঘুম ভেঙ্গে যায়। থানার ছোট বারান্দায় এসে দেখেন রং-বেরঙ্গের ফতুয়া (থামি-ব্লাউস) পরিহিতা ৫০/৬০ জন মগী তরুনী পাত কুয়ার চারিদিকে জড়ো হয়ে হাসি গল্পে মশগুল। তাদের সুউচ্চ কলহাস্যে থানা প্রাংগন মুখরিত। এটিই ছিল সমগ্র টেকনাফে একটি মাত্র কূয়া। প্রতিদিন তরুনীরা পাতকূয়ায় জল নিতে আসতেন। কেউ কেউ থানার ছোট বাগানের শিউলী ফুল তুলতো। ধীরাজ প্রতিদিন গরম চা হাতে থানার বারান্দার চেয়ারে বসে তরুনীদের জল তোলার দৃশ্য দেখতেন।
একদিন ধীরাজের নজরে পড়ে সম্পূর্ন নতুন সাজে সজ্জিত আরেক তরুনীকে, সুন্দর এই তরুনীর নাক-চোখ, মুখ বাংগালী মেয়েদের মত। নাম তার মাথিন। টেকনাফের জমিদার ওয়ানথিনের একমাত্র মেয়ে। প্রথম দর্শনেই মেয়েটিকে তার ভাল লেগে যায়। প্রতিদিন ভোর হওয়ার আগেই ধীরাজ ভট্টাচার্য্য থানার চেয়ারে গিয়ে বসতেন এবং মাথিনের আগমনের প্রতিক্ষা করতেন। মাথিন যখন কলসি কাঁখে তার সুউচ্চ গ্রীবা দুলিয়ে থানা প্রাংগন দিয়ে হেঁটে আসতেন ধীরাজ তন্ময় হয়ে সে দৃশ্য উপভোগ করতেন। অন্যান্য তরুনীরা আসার আগেই মাথিন পাতকূয়ায় আসতেন এবং জল নিয়ে ফিরতেন। ভোরের স্নিগ্ধ আলোয় নীরব নিস্তদ্ধ পরিবেশে তারা একে অপরের সাথে গভীর প্রেমে ও মোহবেশে আছন্ন থাকতেন। পরস্পর পরস্পরের দিকে চেয়ে সম্ভব অসম্ভব নানা কল্পনার রঙ্গিন জাল বুনতেন। দেখা-দেখি, হাসা-হাসি এভাবে তাদের প্রেম ঘনীভুত হয়। দিন গড়াতে থাকে। একদিন, দুইদিন এইভাবে। ইতোমধ্যে দু’জনের প্রেমের কথা সবাই জেনে যায়। নানা বাধা সত্তেও দুজনের মধ্যে বিয়ের কথা পাকা পাকি হয়।
এর মধ্যে কলকাতা থেকে চিঠি আসে ধীরাজের কাছে। তার বাবা অসুস্হ, ধীরাজকে কলকাতা যেতে হবে একমাসের ছুটি নিয়ে। ছুটি না মিললে চাকুরীতে ইস্তফা দিয়ে হলেও যেতে হবে। ধীরাজের আরও একটি ইচ্ছা ছিল বিয়ের আগে তার ভবিষৎ নিয়ে তার বাবা-মা কে জানানো। ধীরাজ সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা যাবেন। সিদ্ধান্তের কথা মাথিনকে জানানো হল। মাথিন রাজি হলেন না। মাথিন নিশ্চিৎ ছিলনা যে, “পরদেশী বাবু” তাকে বিয়ে করার জন্য কলকাতা থেকে ফিরে আসবে কিনা। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে ধীরাজ এক সন্ধায় টেকনাফ থেকে ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।
মাথিনের মনে হলো, বাবার অসুখের কারনে হয়ত ধীরাজ কলকাতা চলে গেছে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে ধীরাজ মাথিনকে বিয়ে করতে চাননি বলেই রাতে অন্ধকারে কাপুরুষের মত টেকনাফ থেকে পালিয়ে গেলেন।
ধীরাজের এভাবে চলে যাওয়াকে প্রেমিকা মাথিন সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। প্রাণ-পুরুষ ধীরাজকে হারিয়ে মাথিন অন্ন জল ত্যাগ করে হন শয্যাশায়ী। জমিদার বাবা ওয়াথিনসহ পরিবারের সদস্যরা শত চেষ্টা করেও অন্ন জল ছোঁয়াতে পারেন নি। তার এককথা – ধীরাজকে চাই। প্রেমের এই বিচ্ছেদ এবং অতি কষ্টে একদিন মাথিন মারা যান।
এ কারনে প্রেমের সাক্ষী “মাথিনের কূপ” দেখে এখনো হাজারো প্রেমিক প্রেমিকা তাদের ঐতিহাসিক প্রেমের কথা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়।
পরের কথাঃ
কলকাতা যাবার পর ধীরাজ পুলিশের চাকুরী থেকে ইস্তফা দেন। নতুন পেশা হিসাবে তিনি ছবিতে অভিনয়কে বেছে নেন। তার অভিনিত ছবিগুলোর মধ্যে আরশা হিন্দু হোটেল, হানা বাড়ি এবং বিপ্লবী খুদিরাম অন্যতম। পরে তিনি নিজের জীবনি অবল্বনে দুইটি বই লিখেন যার একটির নাম “যখন পুলিশ ছিলাম” অন্যটি “যখন নায়ক ছিলাম”। এর পর ধীরাজ আর তার পরিবারের বিষয়ে খুব একটা জানা যায়নি।
পুলিশ প্রশাসন এই জায়গাটি সংরক্ষন করে এটিকে “মাথিনের কূপ” হিসেবে নাম করন করেন। ২০০৬ সালে ধীরাজ-মাথিনের ইতিহাসের প্রায় ৮০ বছর পর, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব খালেদ হোসেন, সাংবাদিক আব্দুল কুদ্দুস রানা কে সাথে নিয়ে এই কূপটির সংস্কার করেন এবং এটিকে একটি দর্শনীয় স্হান হিসেবে পরিচিতি দেন।
যাওয়ার উপায়
টেকনাফ শহরের প্রান কেন্দ্রে নাফ নদীর পাশে টেকনাফ পুলিশ ফাঁড়ির চত্তরে এই মাথিনের কূপ। কক্সবাজার থেকে অনেক গুলো বাস সার্ভিস আছে, ভাড়ায় পাওয়া যাবে রেন্ট-এ-কার এর গাড়ি। ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টার ভিতরে আপনি চলে আসবেন সবুজ পাহাড়ে ঘেরা টেকনাফে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফের দুরতঃ ৮৪ কিঃমিঃ ।
কক্সবাজার এর সকল হোটেল এর ফোন নম্বর
Hotel Shaibal - Address: Cox's Bazar; Phone: 880-341-63274;Fax: 880-341-64202
Phanthonibash - Phone: 880-341-64703; Fax: 880-341-62223
Seagull Hotels Ltd.- Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: 0341-62480-91 ; Fax: 88-0341-64436 ; Email: seagull@gshakti.com
Motel Upal - Address: Cox's Bazar ; Phone: 880-341-64258
Motel Probal - Address: Cox's Bazar ; Phone: 880-341-63211,62635-7
Hotel Sea-Crown - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64795
Hotel Sea-Palace Ltd. - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63692/63792
Hotel Sea-Queen - Address: Main Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63789
Hotel Saimon - Address: Sahid Sharani Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63900/63901/63902/63903/63904
Daffodil Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62544
Nitol Bay Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63677/64278
Hotel Panoa - Address: Laldighir Par, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63282/64382
Uni Resort Ltd. - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63181/63191
Saint Martin Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62862
Haque Guest Inn - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64923
Hotel Sea-Land Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64922
Hotel Nishitha - Address: Anderson Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64024
Hotel Sea-Heaven Guest Home - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63787
Hotel Media International - Address: Sea-Beach Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-68281-5
Hotel Palongki - Address: Laldighir Par, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-66367/63597
Taher Bhaban Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63068
Diamond Palace Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63642
Sohag Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62561
Dream Castle Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64628
Mohammadia Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62629
Shamim Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62325
Sarmom Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64740
Quality Home Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64882/64609
Abakash Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64744
Sugandha Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62466
Hotel Ranchi Pvt. Ltd. - Address: Sahid Sharani Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64452/63455
Hotel Sea-Bird - Address: Main Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63656
Blue Ocean Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63207/62105
Hotel Banu Plaza - Address: Burmese Market, Main Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64097
Hotel Silvia Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62495
Hotel Garden - Address: Anderson Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63589
Hotel Sunmoon - Address: Motel Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63231/63031
Hotel Lodge - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62009
Hotel Al Hera - Address: Main Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62325
Hotel Al Salam - Address: Main Road,Jhilonja, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62068
Hotel Sagar Gaon - Address: Jhaotola, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64248
Hotel Nurani - Address: Bazar Ghata, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63995
Hotel New United - Address: Laldighir Par, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63753
Hotel Sea -Land - Address: Motel Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62133
Hotel Shaheraj - Address: Bazar Ghata, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63554
Hotel Niribili - Address: Sahid Sharani Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63202/64324
Urmi Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63666/64121
Hotel Sea-View - Address: Jhinuk Market, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63518/64491
Zia Guest Inn - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63925
Zia Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64701/64753
Hotel Bay-view Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64787/63127
Hotel International plaza - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-620151
Albatros Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64684
Lemich Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64706
Honeymoon Resort - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63505
Hotel TajSeba - Address: Behind Thana Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64360
Hotel Mishuk - Address: Laboni Point, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64320
Hotel Avisar Pvt. Ltd. - Address: Kolatali Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63061
Hotel Renaissance the Grand - Address: Main Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64790
Hotel Coral Reef - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64469
Sea Hill Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63088
M S Guest House - Address: Kolatali, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-63930
Hotel Kollol Ltd. - Address: Sea Beach Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-64748
Bypass Guest House - Address: Bypass Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-01819-721813
Nishan Guest House - Address: Kolatali Road, Cox's Bazar ; Phone: +88-0341-62629
Hotel Sea Alif - Address: Kolatali Road, Cox's Bazar ; phone: +88-01715-755112
Leguna Beach Hotel - Address : Kolatali Road, Cox's Bazar ; phone : +88-01710-848912
Iqra Beach Hotel - Address : Kolatali Road, Cox's Bazar ; Phone : +88-01732-216677
কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলের নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার-
সী হ্যাভেন গেস্ট হাউজ ব্লক – এ, হাউজ – ৬৭, কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০১৭২৬-৫১৯৩২৩, ০১৮১৮-৫৯৪০২৫
সী হিল গেস্ট হাউজ সী বীচ আবাসিক এলাকা, কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৩০৮৮, ০৩৪১-৬২৭৭৭, ০১৮১৫-০৭৫৬৯৮
সী কিং গেস্ট হাউজ কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৫১২১৯, ০১৮১৮-৮৫৮০৪৪
হোটেল সী প্যালেস (৫ স্টার) ঢাকা অফিস: নুরজাহান টাওয়ার (৩য় তলা), ২ লিংক রোড, বাংলামোটর, ঢাকাফোন: ৯৬৭২৮৭৬, ০১৮১৯-৮০৮৮৪২, ০১৯১৩-৩৮০৮৪৭
হোটেল সী গাল (৫ স্টার) ঢাকা অফিস: হোয়াইট হাউস হোটেল, ১৫৫, শান্তিনগর, ঢাকাফোন: ৮৩২২৯৭৩-৬
হোটেল প্রাসাদ ওরাডাইস (৩ স্টার) ঢাকা অফিস: হাউজ – ২ই, রোড – ২৯, গুলশান – ১, ঢাকাফোন: ৮৮১৭৪০০, ৮৮১০০৫৩, ০১৫৫৬-৩৪৭৭২২কক্সবাজার অফিস: প্লট – ৯, রোড – ১, হোটেল মোটেল জোন (নিউ বীচ রোড), কক্সবাজার
ফোন: ০৩৪১-৬৪৪০৩, ০১৫৫৬-৩৪৭৭১১
হোটেল সী ক্রাউন (৩ স্টার) মেরিন ড্রাইভ, কলাতলী, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪৭৯৫, ৬৪৪৭৪, ০১৮১৭-০৮৯৪২০
সী-আরাফাত রিসোর্ট ব্লক এ, রোড-৩, কলাতলী রোড, বীচ এরিয়া, কক্সবাজারফোন: ০১৮৪৩-৭২৪৫০৪
সী-ল্যান্ড গেস্ট হাউজ লাইটহাউজ রোড, কলাতলী, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪৯২২, ০১৭১১-৯৪১৮২৩, ০১৭১১-৪০৫৯০৭
উর্মি গেস্ট হাউজ কলাতলী রোড, সী বীচ এরিয়া, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪১২১, ০১৮১৯-০৮২৭৭২
বীচ হলিডে গেস্ট হাউজ কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০১৫৫৩-৬০০০৫৩, ০১৮১৬-২২৭৩৯৫
ব্লু ওসেন কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৩২০৭, ০৩৪১-৬২১৩৫, ০১৭১১-৭৮৫৩৮১
তাহের ভবন এন্ড গেস্ট হাউজ কলাতলী রোড, বীচ এরিয়া, কক্সবাজারফোন: ০১৮৫৬-৬৯৯৯১০, ০১৮৫৬-৬৯৯৯১১
ডায়মন্ড প্যালেস গেস্ট হাউস কলাতলী রোড, বীচ এরিয়া, কক্সবাজারফোন: ০১৮১৪-১০৮২৪১
অ্যালবাট্রস রিসোর্ট কলাতলী রোড, বীচ এরিয়া, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪৬৮৪, ০৩৪১-৬২৮৮৯, ০১৮১৮-৫৪০১৭৭
জিয়া গেস্ট ইন কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৩৯২৫, ০১৮১৯-৩২১৫৩৮
সোহাগ গেস্ট হাউজ কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬২৫৬১, ০১৮১৮-০৬৬৯৮০, ০১৭১৫-৮৭৮৮৭৭
হোটেল কল্লোল হোটেল মোটেল জোন, কল্লোল পয়েন্ট, সী বীচ রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪৭৪৮, ০১৭২৭-৬১৩২৫৮, ০১৮১৯-৫৪৮৪৩৪
হোটেল সী আলিফ কলাতলী রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৫১২৫৩, ০১৭১৫-৭৫৫১১২
হোটেল মেরিন প্লাজা প্লট – ১২, ব্লক – বি, কলাতলী মেইন রোড, কক্সবাজারফোন: ০৩৪১-৬৪১৪৬, ০১৭১৬-৭৪২৪৬৪
সেন্ট মার্টিন, ভ্রমণ গাইড
একজন অন্ধও যেন যেতে পারে Doc টি সেভাবেই করার চেষ্টা করেছি।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ 'সেন্ট মার্টিন' এর অবস্থান বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায়। টেকনাফের সর্ব শেষ অংশ অর্থাৎ শাহ্পরীর দ্বীপ হতে প্রায় ১৩ কিলোমিটার ও টেকনাফ হতে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এর বুকে এই দ্বীপ এর অবস্থান। মাত্র ৩ বর্গ কিলোমিটারের (পরিধি হিসেবে ১৪ কিলোমিটার এবং ছেঁড়াদ্বীপ সহ ১৮ কিলোমিটার) কিছু বেশি আয়তনের এই দ্বীপটির জনসংখ্যা প্রায় ৮০০০ হাজার। ১৮৯০-১৯০০ সালের দিকে মাত্র ১৩ টি পরিবারের ৫০ জন সদস্য প্রথম এই দ্বীপে বসতি গড়েন। স্থানীয় প্রায় সবাই তাদেরই বংশধর। সেন্ট মার্টিন মূলত দু’টি নামে পরিচিত। নারিকেল জিঞ্জিরা আর সেন্ট মার্টিন । জিঞ্জিরা মূলত আরবি শব্দ জীন-জাজিরা থেকে এসেছে। জীন মানে জীন বা পরী আর জাজিরা মানে দ্বীপ। কথিত আছে সেই কালে জীন পরীরা চলাচলের সময় এই দ্বীপে বিশ্রাম নিত। সেখান থেকেই এই দ্বীপের নাম হয়েছে জিন-জাজিরা বা জিঞ্জিরা। পরবর্তীতে নারিকেল শব্দটি যুক্ত হয়ে হয়েছে নারিকেল জিঞ্জিরা। এদিকে সেন্ট মার্টিন ছিলেন একজন ব্রিটিশ ধর্ম যাজক। তিনি এই দ্বীপে কিছুকাল অবস্থান করেন। এদিকে ব্রিটিশ সরকারের এক আর্মি অফিসার মিস্টার কক্স (যার নামে কক্সবাজার) ছিলেন সেন্ট মার্টিনের ভক্ত। মিস্টার কক্স তার প্রিয় ধর্ম যাজকের নাম স্মরণীয় রাখতে এই দ্বীপের নাম রাখেন সেন্ট মার্টিন । কেন যাবেন সেন্ট মার্টিনঃ আপনার উত্তর যদি হয় সমুদ্র দেখতে তাহলে বলবো “সমুদ্র দেখার জন্য সেন্ট মার্টিন যাওয়ার প্রয়োজন নেই”। সমুদ্র আপনি কক্সবাজার, টেকনাফ, কুয়াকাটাতেও তো দেখতে পারেন। সেন্ট মারটিন মূলত যাওয়া উচিৎ রহস্যের সন্ধানে। নির্জনতার রহস্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রহস্য আর সাগর তলের বিস্ময়কর রহস্য। সৃষ্টিকর্তা এখানকার প্রকৃতিকে দু’হাত ভরে দান করেছেন। চতুর্দিকের নীল- সাদা আকাশের নিচে যেদিকেই তাকান শুধু পানি আর পানি। নীল পানিতে আকাশটা যেন হঠাৎই ঝুঁকে পড়েছে ওল্টানো বাটির মতো। অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করে এখানে। কি দেখবেনঃ সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দিবো কোথা? সেন্ট মার্টিনে কি দেখবেন তা আলাদা করে বলতে গেলে একটু বিপদেই পড়তে হবে। ৭ টি পাড়া নিয়ে গঠিত এই দ্বীপটির প্রতিটি অংশই রূপের ডালা সাজিয়ে রেখেছে। সতন্ত্র তাদের প্রত্যেকের রূপ কিন্তু এক সূতায় গাথা। ঠিক মুক্ত মালার মত। তবে প্রকৃতি একেক সময় একেক ভাবে সুন্দর। বিকেল বেলাটা এক কাপ চায়ের সাথে দ্বীপের পশ্চিম পাড়ের বীচ থেকে আপনি হয়তো দেখতে পাবেন আপনার জীবনের সেরা সূর্যাস্ত। সকালটা কাটিয়ে দিন পূর্ব বীচে। মায়ানমারের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে সূর্যের প্রথন কিরণ যখন আপনার চোখে ধরা দেবে তখন পূর্ব বীচ মায়াবী রূপ ধারন করে। দ্বীপের সর্ব দক্ষিনে বেশ কিছু অংশ নিয়ে কোরালের উপর ভর করে তৈরি হয়েছে ছেঁড়া দ্বীপ। বর্ষা মৌসুমে মূল দ্বীপ থেকে ছিঁড়ে যায় বা আলাদা হয়ে যায় বলেই এর নাম ছেঁড়াদ্বীপ। হেঁটে বা বোটে করে যেতে পারেন এই দ্বীপে। মূল দ্বীপ থেকে সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রলার, স্পীড বোট যায় এই দ্বীপে। চাইলে তাঁবুতে এক রাত থেকে যেতে পারেন এখানে। তবে নিরাপত্তারা বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
কেমন হওয়া উচিৎ ট্যুর প্লান ?
** যারা কক্সবাজার থেকে প্যাকেজ নিয়ে সেন্ট মার্টিনে আসেন তাদের জন্য সমবেদনা। আমি অন্তত ১০০ মানুষকে চিনি যারা ডে লং প্যাকেজ নিয়ে সেন্ট মার্টিনে গিয়ে ফিরে এসে সেন্ট মার্টিনে যাওয়া নিয়ে আফসোস করেছে। তারপরও যারা সময়ের অভাবে ডে লং ট্রিপে সেন্ট মার্টিন যাবেন তারা শিপ থেকে নেমেই ভ্যান নিয়ে চলে যাবেন পশ্চিম বীচে। সেন্ট মার্টিনে পানিতে নামার জন্য পশ্চিম বীচের বিকল্প নেই। যদিও পশ্চিম বীচ পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে তবুও আমি ভ্যান নিতে বলবো। এইটুকু যেতে ভ্যান ভাড়া গুণতে হবে ১৫০-২০০ টাকা। পশ্চিম বীচে গিয়েই নেমে পড়ুন স্বচ্ছ পানিতে। মনে রাখবেন যখনই পানিতে নামুন না কেন ২ টার আগেই পানি থেকে উঠে পড়ুন। মনে রাখবেন আপনার ফেরার শিপ কিন্তু ৩ টায়। তাই ২ টার আগে না উঠে পড়লে আপনি খাওয়ার সময়টুকুও পাবেন না। এই টাইপ ট্রিপ আসলে good for nothing টাইপ ট্রিপ। মানে আসলাম, খেলাম, ফিরে গেলাম আর কি !
** ১ দিনের প্ল্যানঃ যারা এক দিনের জন্য সেন্ট মার্টিনে যাবেন তাদের জন্য প্রথম পরামসস হল শিপ থেকে নামতে তাড়াহুড়া করবেন না। আসতে ধীরে শিপ থেকে নেমে হোটেলে উঠে পড়ুন। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে চলে যান ছেঁড়াদ্বীপ। চেষ্টা করবেন ৪ টার দিকে রওনা দিতে। তাতে রোদ যেমন কিছুটা পরে যাবে তেমনি ছেঁড়া দ্বীপে সূর্যাস্ত দেখে ফিরতে পারবেন। মনে রাখবেন ছেঁড়া দ্বীপের সূর্যাস্ত অসাধারণ। তবে সূর্যাস্তের পরে বেশি দেরি করবেন না। মূল দ্বীপে ফিরে এসে আড্ডা দেয়ার ভালো জায়গা হল বাজারের জেটি অথবা পশ্চিম বীচের যে কোন জায়গা। বীচের যেখানেই থাকুন না কেন নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোন সমস্যা নেই। রাতে চাইলে বার-বি-কিউ করতে পারেন। বার-বি-কিউ করার ক্ষেত্রে পরামসস হল স্থানীয় হোটেল গুলোতে না করে কোন রিসোর্টে করা। রিসোর্ট গুলোতে দাম ৫০-১০০ টাকা বেশি নিলেও মাছ ফ্রেশ পাবেন। যত রাত পর্যন্তই জেগে থাকুন না কেন ঘুম থেকে উঠে পড়ুন ৫-৫.৩০ এর মধ্যে। পূর্ব দিক থেকে হাঁটা শুরু করুন। উদ্দেশ্য পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখা। পুরো দ্বীপ চক্কর দিতে আপনার সময় লাগবে ৩.৩০-৪ ঘণ্টা। মনে রাখবেন সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। ১০ টা নাগাদ ফিরে আসুন হোটেলে। মুখে কিছু দিয়ে নেমে পড়ুন সমুদ্রে। ১২ টা নাগাদ ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে খেয়ে নিন। ২.৩০ এর দিকে উঠে পড়ুন আপনার নির্ধারিত শিপ। মনে রাখবেন ২.৩০ এর পরে শিপ উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়।
** ২ দিনের প্ল্যানঃ এক দিনের জন্য সেন্ট মার্টিনে যাবেন তাদের মত ২ দিনের ভ্রমণকারীদের জন্যও পরামসস হল শিপ থেকে নামতে তাড়াহুড়া করবেন না। আসতে ধীরে শিপ থেকে নেমে হোটেলে উঠে পড়ুন। একটু পরে নেমে পড়ুন সমুদ্রে। ঘণ্টা খানেক দাপাদাপি করে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিন । ৫ টা নাগাদ চলে যান বীচের পারে। অবশ্যই পশ্চিম বীচে। আয়েশ করে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিন প্রথম দিনের সন্ধ্যা। সন্ধ্যার পর চলে যেতে পারেন বাজারের জেটিতে। ঝিরি ঝিরি বাতাসে জেটিতে বেশ আমুদে একটা ভাব এসে যায়। অনেক রিসোর্টে রাতে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় গান পরিবেশ করা হয়। রাতে চেষ্টা করুন একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে। সারা দিনের ধকল তো আর কম যায়নি ! পরদিন সকাল ৮ টার মধ্যে নাস্তা শেষ করে চলে যান ছেঁড়াদ্বীপ। ছেঁড়াদ্বীপে গোসলও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ছেঁড়া দ্বীপের শেষ মাথায় গিয়ে পানিতে নামাই ভালো। এখানে কোরাল তুলনামুলক কম আর ঢেউ গুলো চমৎকার। দুপুর নাগাদ ফিরে আসুন মূল দ্বীপে। দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিন। আগের দিনের মত বিকেলে পশ্চিম বীচে সূর্যাস্ত দেখে বীচ ধরে উত্তর দিকে হাঁটতে হাঁটতে জেটি পর্যন্ত চলে যান। অসাধারণ ভিউ আর ছবি পাবেন। এই রাতে বার-বি-কিউ করতে পারেন। বার-বি-কিউ করার ক্ষেত্রে পরামসস হল স্থানীয় হোটেল গুলোতে না করে কোন রিসোর্টে করা। রিসোর্ট গুলোতে দাম ৫০-১০০ টাকা বেশি নিলেও মাছ ফ্রেশ পাবেন। যত রাত পর্যন্তই জেগে থাকুন না কেন ঘুম থেকে উঠে পড়ুন ৫-৫.৩০ এর মধ্যে। পূর্ব দিক থেকে হাঁটা শুরু করুন। উদ্দেশ্য পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখা। পুরো দ্বীপ চক্কর দিতে আপনার সময় লাগবে ৩.৩০-৪ ঘণ্টা। মনে রাখবেন সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। ১০ টা নাগাদ ফিরে আসুন হোটেলে। মুখে কিছু দিয়ে নেমে পড়ুন সমুদ্রে। ১২ টা নাগাদ ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে খেয়ে নিন। ২.৩০ এর দিকে উঠে পড়ুন আপনার নির্ধারিত শিপ। মনে রাখবেন ২.৩০ এর পরে শিপ উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়।
কি খাবেনঃ
এই দ্বীপের সবচেয়ে বিখ্যাত জিনিস হল ডাব। এই দ্বীপের নাম নারিকেল জিঞ্জিরা এমনি এমনি হয়নি। এখানকার ডাবের পানি যেমন মিষ্টি তেমনি সুস্বাদু। সেন্ট মারটিনে গেলে ডাবের পানি মিস করা ঠিক হবে না।
যারা মাছ খান না আমার মতে তাদের সেন্ট মার্টিন যাওয়ার অধিকারই নেই। কারন কোরাল, সুন্দরী পোয়া, ইলিশ, রূপচাঁদা, লবস্টার, কালাচাঁদার স্বাদ এক কথায় অসাধারণ। আর একটা জিনিস অবশ্য খেয়ে দেখতে পারেন। সেটা হল কুরা (স্থানীয় ভাসায় দেশী মুরগিকে বলা হয় কুরা)। শুঁটকি মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে লইট্টা, ছুড়ি, রূপচাঁদা, কাচকি ট্রাই করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন বেশির ভাগ শুঁটকি কিন্তু আসে কক্সবাজার ও চট্ট্রগ্রাম থেকে। যারা ইলিশ খুব বেশি পছন্দ করেন তারা জেনে রাখুন সমুদ্রের ইলিশ নদীর ইলিশের মত টেস্টি নয়।
যারা জানুয়ারী বা ফেব্রুয়ারীতে সেন্ট মারটিন যাবেন তারা অবশ্যই তরমুজ মিস করবেন না। দেখতে খুব একটা লাল না হলেও খেতে কিন্তু বেশ।
যা কখনই করবেন নাঃ
** মনে রাখবেন পাথুরে সৈকত, প্রবাল ও নীল সমুদ্র আমাদের দেশে শুধুমাত্র এখানেই আছে। এই দ্বীপটি ২০০৫ সালে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত। তাই সৃতি হিসেবে এখান থেকে প্রবাল, শৈবাল, সামুক-ঝিনুক, কেয়া গাছের ফল নিয়ে আসবেন না। এটা শুধু অনুচিতই নয় বরং দণ্ডনীয় অপরাধও বটে।
** সব মিলিয়ে এখানে মোট ১১ টি বিপদজনক স্থান/ বা ডেঞ্জার জোন আছে। এই জোনে পানিতে না নামাই ভালো। কয়েকটি জায়গাতে লাল পতাকা দেয়া আছে তবে সবগুলো পয়েন্টে নেই। ** পানিতে নেমে প্রবালে পা কেটে ফেলেন অনেকে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরী।
** এ অঞ্চলের মানুষ ধর্মীয় বিষয়গুলোতে বেশ সেন্সিটিভ। তাই ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত লাগে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
** সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এই দ্বীপের প্রবালগুলোকে আমরা নিজ হাতে অতি যত্ন সহকারে মেরে ফেলছি। আমাদের ফেলে আসা পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল সাগরের তলার পরিবেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। তাই অনুরোধ এইসব তো ফেলবেনই না বরং আসার সময় সম্ভব হলে একটি বা দু’টি বোতল বা পলিথিন কুড়িয়ে নিয়ে আসুন। আপনার বা আমার একটি দু’টি বোতল হয়তো পরিবেশের বিপর্যয় রোধ করতে পারবে না। কিন্তু জানেন তো বিন্দু বিন্দু বালু কনা ...... ।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামলী, হানিফ, রিলেক্স, তুবা লাইন(নন এসি) এবং সেন্ট মার্টিন সার্ভিস, বাগদাদ এক্সপ্রেস, গ্রীন লাইন (এসি) সহ বেশ কিছু বাস টেকনাফ যায়। নন এসি বাসের ভাড়া ৯০০ টাকা আর বেশিরভাগ এসি বাসের ভাড়া ১৫৫০ টাকা। দমদমিয়া ঘাট থেকে বেশ কয়েকটি শিপ ছাড়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে সকাল ৯ঃ৩০ মিনিটে। যা দ্বীপে পৌছায় ১২ টার মধ্যে। এগুলো ফিরে আসে বিকেল ৩ টার দিকে সেন্ট মার্টিন থেকে। শিপ ও ক্লাস ভেদে এগুলোর ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অফ সিজনে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) শিপগুলো চলে না, এই সময়টাতে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার একমাত্র উপায় হল ট্রলার।
কক্সবাজার থেকে গেলে প্যাকেজ নিয়ে যাওয়াই ভালো। কক্সবাজারে যে হোটেলে থাকবেন, তাদের কাছে বললে তারা ব্যবস্থা করে দিবে। তবে তাদের কাছে শুধু ট্রান্সপোর্ট এর সুবিধা ও আলাদা করে নেয়া যায়। এর সুবিধা হল খুব ভোরে উঠে টেকনাফ যাওয়ার জন্য বা শিপের টিকেটের জন্য আলাদা করে দৌড় ঝাঁপ করতে হবে না। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ, শিপের রিটার্ন টিকেট(সেন্ট মার্টিন যাওয়া এবং আসা) এবং আবার টেকনাফ থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা সব মিলিয়ে খরচ হয় ১০০০-২০০০ টাকা (শিপের ক্লাস ভেদে খরচ বাড়ে-কমে)।
কিভাবে নিবেন যাওয়ার প্রস্তুতিঃ
নতুন কোন জায়গায় যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন, ইনফরমেশন হল আপনার প্রধান অস্ত্র। আপনার কাছে যত বেশি ইনফো থাকবে আপনার ভ্রমণ ততো স্বাচ্ছন্দময় হবে। সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কানেক্টিং ফ্যাক্টর কাজ করে। এর প্রথম পর্যায়ে আপনাকে বাসের টিকেট কনফার্ম করতে হবে। সম্ভব হলে যাওয়া আসা দুটোরই। এর পরের কাজ হল শিপের টিকেট কনফার্ম করা এবং সর্বোপরি সেন্ট মার্টিনে কোন হোটেল বা রিসোর্ট বুক করা। এই তিনটি ধাপ কনফার্ম হলেই আপনি সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কিভাবে বুকিং করবেনঃ
বাসঃ নন এসি বা এসি যাই হোক না কেন সবগুলো বাস মোটামুটি ফকিরাপুল থেকে যাত্রা শুরু করে। তাই টিকেট কাটার জন্য ফকিরাপুল যাওয়াই ভালো। তবে সায়দাবাদ বা যাত্রাবাড়ী থেকেও উপরে উল্লেখিত বাস কাউন্টার থেকে আপনি আপনার টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। একটা কোথা মাথায় রাখুন, আগে বাস কোম্পানিগুলো ফোনে বুকিং নিলেও এখন আর নেয় না। তাই ফোন করে বুক দেয়ার চেষ্টা না করে একটু কষ্ট করে হলেও কাউন্টারে গিয়ে টিকেট করে ফেলুন।
শিপ বুকিং এর ক্ষেত্রে চলে যেতে পারেন শিপ কোম্পানিগুলোর টিকেট সেলিং সেন্টারে। কেয়ারী সিন্দাবাদ এবং কেয়ারী ক্রুজের অফিস ধানমন্ডিতে। ফোন নাম্বার ০১৮১৭১৪৮৭৩৫। এল সি টি কুতুব্দিয়ার অফিস পল্টনে। ফোন নাম্বার ০১৭১৪৬৩৪৭৬২। ** নাম্বারগুলো নিশ্চিত হয়ে নিয়েন। এ ছাড়াও এম ভি ফারহান, কাজল, বে-ক্রুজ, গ্রীন লাইনের (০২৯৩৩৯৬২৩, ০২৯৩৬২৫৮০) শিপও রয়েছে।
সেন্ট মার্টিনে হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং এর ক্ষেত্রে একটু সাবধানী সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরী। মেইন ল্যান্ডের মত সুযোগ সুবিধা দেয় এমন একটিও হোটেল/ রিসোর্ট এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর মূল কারন হল বিদ্যুৎ। ১৯৯১ এর আগে সেন্ট মার্টিনে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকলেও ১৯৯১ এর প্রলয়ংকারি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সব লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। এর পরে সেন্ট মার্টিন আর সরকারী ব্যবস্থায় বিদ্যুতের মুখ দেখেনি। তাই হোটেল/ রিসোর্ট গুলো নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থেকে। এর ফলে বিদ্যুৎ রিলেটেড সুবিধাগুলো (ফ্রিজ, রুমে এসি, ২৪ ঘণ্টা ফ্যান)এখানে পর্যাপ্ত নয়। * হোটেল/ রিসোর্ট বুকিং এর ক্ষেত্রে কে কতটুকু সুযোগ সুবিধা দেবে তা নিশ্চিত হয়ে নিন। * সেন্ট মার্টিন উপভোগ করতে চাইলে পশ্চিম বীচের বিকল্প নেই। তাই পশ্চিম পাড়ের রিসোর্টগুলোকে টার্গেট করতে পারেন। তবে যারা হইহুল্লর পছন্দ করেন তারা বাজারের কাছাকাছি হোটেলগুলোতে থাকুন। হোটেল/ রিসোর্ট বুকিং এর ক্ষেত্রে আপনারা চাইলে সেখানে গিয়েও খুঁজে নিতে পারেন। এতে সুবিধা অসুবিধা দুটোই আছে। হোটেল খুঁজতে খুঁজতে আপনার যেটুকু সময় নষ্ট হবে আর যে ধকল যাবে তাতে তাতে দরদাম করে হোটেল ভাড়া কিছুটা কমাতে পারলেও রুম পেতে পেতে আপনার প্রায় ২-৩ টা বেজে যাবে। আর একটি বিষয় হল বিশেষ ছুটির দিন (১৬ ডিসেম্বর,২৫ ডিসেম্বর,৩১ ডিসেম্বর,২১ ফেব্রুয়ারী,২৬ মার্চ সহ অন্য তিন দিনের টানা বন্ধ) গুলোতে কোন প্রকার হোটেল / রিসোর্ট পাওয়াই কষ্টকর হয়ে যায়। তাই এসময়গুলোতে আগে থেকেই হোটেল / রিসোর্ট বুক করে নিশ্চিত করে রাখবেন। যেহেতু শিপ সেন্ট মার্টিনে পৌছায় ১২ টার মধ্যে, তাই ট্যুরিষ্টদের রিসোর্ট বা হোটেলে পৌছতে ১২.৩০-১ টা বাজে। আবার অন্য দিকে শিপ সেইন্ট মারটিন থেকে ছেড়ে যায় ৩ টায়, তাই এই ৩-৩.৩০ ঘন্টার একটা ঝামেলায় পড়তে হয় রিসোর্ট/হোটেল মালিকদের, আগেরদিনের ট্যুরিষ্টদের, নতুন ট্যুরিষ্টদের প্রায় সবারই। এখানে সবার মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া এই সমস্যার সমাধান নেই। প্রথমত প্রায় প্রতিটি হোটেল/রিসোর্টে চেক আওট টাইম ১১-১১.৩০ হলেও কেও ঠিক সময়ে রুম ছাড়তে চান না, অথচ আগের দিন রুম এ ঢুকতে দেরি হওয়াতে তিনি নিজেই মন খারাপ করেছিলেন !আসলে দিনের একটি টাইমেই শিপ আসে আর এক টি টাইমেই সব শিপ ছেড়ে যায়, তাই মাঝের এই ৩-৩.৩০ ঘন্টা সময় নিয়ে ঝামেলা থেকেই যায়।আপনারা যা করতে পারেন, যদি ফিরে আসার দিন সকালে ছেড়াদ্বিপ যাবার প্ল্যান থাকে, তাহলে ভোরে চলে যাবেন, আর যাবার আগে ব্যাগ গুছিয়ে হোটেল এর লবি/ মালিকের কাছে দিয়ে যাবেন। এতে করে নতুনদের জন্য রুম পরিষ্কার করার সময় পাওয়া যায়। তখন আপনারা ফিরে এসে এক্সট্রা ওয়াশরুম এ ফ্রেশ হয়ে খেয়ে সহজেই বের হয়ে যেতে পারবেন।
কিছু হোটেল ও রিসোর্টঃ
আবাসিক হোটেলগুলো মূলত বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মানসম্মত হোটেল গুলোর মধ্যে ব্লু মেরিন (০১৮১৫৬৩২০৩৭, ০১৭১৩৩৩৯৯০০১), সেন্ড শোর (০১৮১৫৬৪৮৭৩১), হোটেল সি ইন বেশ ভালো। এগুলোর ভাড়া রুম ভেদে ১৫০০-৪০০০ এর মত। *** আরও কিছু হোটেলের নাম ধীরে ধীরে যুক্ত করা হবে *** রিসোর্টগুলো মূলত পূর্ব ও পশ্চিম বীচের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। সুযোগ সুবিধার দিক থেকে রিসোর্টগুলো হোটেলের চেয়ে অনেক ভালো। বেশিরভাগ রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব রেস্তোরাঁ। আছে বার-বি-কিউ করার ব্যবস্থা। আর বীচের পারে হওয়াতে এগুলো থেকে বেশ ভালো ভাবে সমুদ্র উপভোগ করা যায়। এগুলোর অসুবিধা একটাই। সেটা হল বাজার থেকে কিছুটা দূরে। মানসম্মত কিছু রিসোর্ট-
সায়রী ইকো রিসোর্টঃ পরিবেশের কথা মাথায় রেখে যথা সম্ভব স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে রিসোর্টটি। এটি জায়গার দিক দিয়ে সেন্ট মার্টিনের সবচেয়ে বড় রিসোর্ট। এদের সেন্ট্রাল সোলার সিস্টেম থাকায় ২৪ ঘণ্টা লাইট এর সুবিধা পাওয়া যায়। ফ্যানগুলো অবশ্য জেনারেটরের সাহায্যে রাত ১২ টা পর্যন্ত চলে। নিজস্ব রেস্তোরাঁ, কফি জোন, দোকান থাকায় এই রিসোর্টের গেস্টদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পরে না। প্রাইভেট বীচ, বীচ চেয়ার, হেমক, বোতলের তৈরি বোট গেস্টদের জন্য ফ্রী। এটি বীচ থেকে এতো কাছে যে পূর্ণিমার দিনগুলোতে সমুদ্রের পানি রিসোর্টের বীচ পাড়ের দরজা ছুই ছুই করে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্ত দেখা হতে পারে আপনার বাড়তি পাওনা। এখান থেকে ছেঁড়া দ্বীপ যাওয়া বা স্কুবা করতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এই রিসোর্টের বড় একটি সমস্যা হল এটি বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে। ভাড়া রুম ভেদে ১৫০০-৩৫০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৭১১ ২৩২৯১৭ ও ০১৯১৯ ১১১২১১ (https://web.facebook.com/ShayariEcoResort/)
সীমানা পেরিয়েঃ সীমানা পেরিয়ে রিসোর্ট এই দ্বীপের পরিচিত রিসোর্ট গুলোর মধ্যে অন্যতম। গাছপালা ঘেরা রিসোর্টটি আপনার ভালো লাগবে। রয়েছে নিজস্ব রেস্তোরাঁ।
নীল দিগন্তেঃ সমুদ্র পাড়ের রিসোর্টগুলোর মধ্যে নিলদিগন্ত অন্যতম। বেশ গুছানো ও পরিপাটি। এই রিসোর্টটির ওয়াচ টাওয়ার থেকে সমুদ্র দর্শন বেশ উপভোগ্য। নিজস্ব রেস্তোরাঁ, বার-বি-কিউ, মিউজিক সব মিলিয়ে নীল দিগন্তে বেশ জমজমাট। তবে সায়রী ইকো রিসোর্টের মতই এটাও বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে। এদের রুম ভেদে ভাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০১৭৩০০৫১০০৪
ব্লু লেগুন রিসোর্টঃ সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিম বীচে অবস্থিত। হোটেল অবকাশ থেকে হেঁটে যেতে হয় ৫ মিনিট। রিসোর্ট থেকে আপনি সূর্যাস্ত এবং রাতের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে পাবেন। রিসোর্টে রয়েছে খাবার শু-ব্যবস্থা। রুম ভাড়াঃ কাপল(১৫০০-২০০০); ডাবল (১৪০০-২৫০০)। যোগাযোগঃ ০১৭২৩৫৮৬৮৭৭; ০১৬৭৩১১১২৩৭
(https://www.facebook.com/BlueLagoon...)
কোরাল ভিউ রিসোর্টঃ পূর্ব বীচে যতগুলো রিসোর্ট আছে কোরাল ভিউ তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপাটি। হ্যমক, বসার জায়গা, রেস্তোরাঁ সব মিলিয়ে বেশ ভালো। বাজার থেকে খুব বেশি দুরেও নয়। কিন্তু এটিরও সমস্যা আছে। সেটি হল পূর্ব অংশে সমুদ্রে ঢেউ নেই। রিসোর্টে বসে আপনি সাগরের নয় বরং নদীর ঢেউ পাবেন। রুম ভেদে ভাড়া ৩০০০-৬৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ ০১৯৮০০০৪৭৭৮ (https://web.facebook.com/CoralViewR...)
এক নজরেঃ
দ্বীপের নামঃ সেন্ট মার্টিন
আয়তনঃ ৩ বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি।
জনসংখাঃ ৮০০০ (প্রায়)
যা করতে পারেনঃ পুরা দ্বীপ ঘুরতে পারেন, ছেঁড়া দ্বীপ যেতে পারেন, স্কুবা করতে পারেন, সমুদ্র স্নান।
যাতায়াত(ঢাকা থেকে) ঃ বাসঃ হানিফ, শ্যামলী, রিলাক্স, তুবা লাইন, গ্রীন লাইন, বাগদাদ, সেন্টমার্টিন সার্ভিস।
শিপঃ কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ, এল সি টি কুতুবদিয়া, এম ভি কাজল, ফারহান, বে-ক্রুজ, গ্রীন লাইন।
হোটেল / রিসোর্টঃ
১। সায়রী ইকো রিসোর্ট (০১৭১১২৩২৯১৭; ০১৯১৯১১১২১১) ২। সিমানা পেড়িয়ে(০১৮১৯০১৮০২৭)
৩। নীল দিগন্তে (০১৭৩০০৫১০০৪) ৪। সিমানা পেড়িয়ে(০১৮১৯০১৮০২৭)৫। কোরাল ভিউ (০১৯৮০০০৪৭৭৮)
৬। ব্লু লেগুন (০১৭২৩৫৮৬৮৭৭, ০১৮১৮৭৪৭৯৪৬)৭। সমুদ্র কুটির৮। প্রাসাদ প্যারাডাইস(০১৭৯৬৮৮০২০৭)
৯।, লাবিবা বিলাস(০১৭১৪৬৩৪৭৬২),১০। পান্না রিসোর্ট (০১৮১৬১৭২৬১৫),১১। ড্রিম নাইট (০১৭১০৩৯০২৫১)
১২। ব্লু মেরিন (০১৮১৫৬৩২০৩৭, ০১৭১৩৩৩৯৯০০১)১৩। সেন্ড শোর (০১৮১৫৬৪৮৭৩১)
১৪। হোটেল সি ইন১৫। সমুদ্র বিলাস (০১৮৩৭১৯৬৪৫৪)১৬। টিসিবি রিসোর্ট।১৭। সমুদ্র কানন।
১৮। মিউজিক ইকো রিসোর্ট১৯। বাগানবাড়ী বীচ রিসোর্ট (০১৬৭৩৯১৬৯২০)
সেন্টমার্টিনের কয়েকটি জনপ্রিয় রিসোর্ট ও হোটেলের পরিচিতিঃ (সংগ্রহে রাখতে পারেন, কাজে দিবে)
০১) ব্লু মেরিন
নিঃসন্দেহে সেন্টমার্টিনের সেরা হোটেল। জেটি থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত হোটেলটির অবকাঠামো খুবই চমৎকার। তিনতলা বিশিষ্ট এই হোটেলে ৩৪ টি বিলাসবহুল রুম সহকারে নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট রয়েছে।
তবে বাজারের কাছে বলে এর আশেপাশে মানুষজনের সমাগম খুব বেশী। এছাড়া এই রুমগুলো থেকে সরাসরি বীচ দেখা যায় না। ফেইসবুকে ব্লু মেরিন হোটেলের রেটিং খুব ভালো ৪.৫০/৫.০০ (৬৫ টি রিভিউ)। এর রুমভাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৩৯৯০০০ (ঢাকা), ০১৭১৩-৩৯৯২৫০ (সেন্টমার্টিন),
০২) নীল দিগন্তে রিসোর্ট
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দর একটি রিসোর্ট। এর আয়তনও বেশ বড়ো। অস্তাচল, ছায়াবিথি, তরুছায়া ও নীপবন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত এর মোট রুমের সংখ্যা ৩৮ টি। রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে এখানে। এই রিসোর্টের সমস্ত রুমই টিনশেড। রুমভাড়া ২,০০০-৪,৫০০ টাকা।
এর সমস্যা হলো, জেটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে হওয়ায় ভ্যানভাড়া গুনতে হবে অন্তত দু’শ টাকা। এছাড়া রুম থেকে বীচ দেখারও কোন সুযোগ নেই। তবে ফেইসবুকে এর রিভিউ ভালো নয় কেন, বুঝলাম না। রেটিং হলো ৩.১০/৫.০০ (১৪ টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৭৩০-০৫১০০৫, ০১৭৩০-০৫১০০৬, ০১৭৩০-০৫১০০৭
০৩) সী ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টস
এর অবস্থান নর্থ বীচে, জেটি থেকে সাত মিনিট হাটার দূরত্বে। নতুন ম্যানেজমেন্টের অধীনে এসে রিসোর্টেরর খোলনলচে একেবারে বদলে গেছে। সম্প্রতি যারা এখানে থেকেছেন, সবাই এই দ্বিতল রিসোর্টটির প্রশংসা করেছেন। নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টসহ এখানে ১৯ টি রুম ও ০৪ টি তাবু রয়েছে। সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো, এর অধিকাংশ রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। এছাড়া এখানে জুসবার, ফ্রি ওয়াইফাই (শিগগীর নাকি আসছে), ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, স্পোর্টস ও কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্টের সুবিধা রয়েছে।
সী ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টসের প্রতি রুমের ভাড়া ১,৫০০-৩,০০০ টাকা। ফেইসবুকে এই রিসোর্টের রেটিং দেখলাম অসাধারন ৫.০০/৫.০০ (৫৫ টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৮৪০-৪৭৭৭০৭ (ঢাকা), ০১৮৪০-৪৭৭৯৫৬ (সেন্টমার্টিন)
০৪) লাবিবা বিলাস
সুপ্রশস্ত এই দ্বিতল রিসোর্টে মোট ৪৩ টি রুম, একটি রেস্ট্যুরেন্ট ও একটি ছোট্ট সেমিনার রুম রয়েছে। রিসোর্টটির অবস্থান নর্থ বীচে। শিপঘাট থেকে যেতে একটু বেশী সময় লাগে, হাঁটাপথে ১৫-২০ মিনিট। এর রুমভাড়া ১,৫০০-৪,০০০ টাকা।
এখানে বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলার ব্যবস্থা রয়েছে। ফেইসবুকে এর রেটিং ৩.৭৫/৫.০০ (২০ টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৭৪৪-১৩৬১৪৫ (ঢাকা), ০১৮৩৪-২৬৭৯২২ (সেন্টমার্টিন)
০৫) প্রাসাদ প্যারাডাইজ
এই দ্বিতল হোটেলটির অবস্থান ব্লু মেরিনের কিছুটা উত্তরে। এখানে মোট ১৬ টি কক্ষ রয়েছে। হোটেলের সাথে রেস্ট্যুরেন্টও আছে। বীচ থেকে একটু দূরে বলে অল্প কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্রের খানিকটা দেখা যায়। প্রাসাদ প্যারাডাইজের প্রতিটি রুমের ভাড়া ২,০০০-৪,০০০ টাকা।
ফেইসবুকে এর রেটিং বেশ ভালো ৪.৫০/৫.০০ (৩৭ টি রিভিউ)।
যোগাযোগঃ ০১৫৫৬-৩৪৭৭১১
০৬) সী ইন
সেন্টমার্টিন বাজারের মূল রাস্তা ধরে পাঁচ মিনিট হাটলেই এই হোটেলটির অবস্থান। এখানে মোট ২৬ টি কক্ষ রয়েছে। অবকাঠামোর দিক থেকে এটি দূর্দান্ত সুন্দর। এর নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট নেই, তবে আশেপাশে বেশকিছু রেস্ট্যুরেন্ট রয়েছে। এর প্রতিটি রুমের ভাড়া ২,০০০-৩,৫০০ টাকা।
এই হোটেলের সমস্যা হলো, এটি বাজারের পাশে অবস্থিত। এখান থেকে সমুদ্র দেখার কোন উপায় নেই। এবং নির্জনতা উপভোগের সুযোগও সীমিত।
যোগাযোগঃ ০১৭২২-১০৯৬৭০, ০১৭৩৫-৫৮১২৫১, ০১৭৭৫-০১১২০৮
০৭) সীমানা পেরিয়ে
এই রিসোর্টের অবস্থান ওয়েস্ট বীচে, ভ্যানে করে যেতে হবে। এতে ১৪ টি রুম ও একটি নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্ট আছে। বীচের পাশাপাশি বলে কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। এর ভাড়া ১,৫০০-২,৫০০ টাকা।
ফেইসবুকে এর রেটিং ৪.৫০/৫.০০ (১৬ টি রেটিং)।
যোগাযোগঃ ০১৯১১-১২১২৯২, ০১৮১৯-০১৮০২৭
০৮) কোরাল ভিউ
এই রিসোর্টটি নৌবাহিনী পরিচালনা করে। সেন্টমার্টিনের ইস্ট বীচে এর অবস্থান। জেটি থেকে অনেক দূরে বলে ভ্যান নিয়ে যেতে হবে। আয়তন অনেক বড়ো এবং রুমগুলো থেকে মোটামুটি সমুদ্র দেখা যায়। দ্বিতল এই রিসোর্টটির সামনে একটি সবুজ মাঠ রয়েছে। একে হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে শুনেছি। রিসোর্টের নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে। এর রুমপ্রতি ভাড়া ২,৫০০ টাকা থেকে শুরু। ৬০০০ টাকার রুমও আছে।
এর রেটিং খুব ভালো ৪.৪০/৫.০০ (১২১ টি রিভিউ)
যোগাযোগঃ ০১৯৮০-০০৪৭৭৭, ০১৯৮০-০০৪৭৭৮
০৯) প্রিন্স হ্যাভেন
প্রাসাদ প্যারাডাইজের আরো কিছুটা উত্তরে নর্থ বীচের পাশে এই রিসোর্টটির অবস্থান। এখান থেকে সমুদ্রের বেশ ভালো ভিউ পাওয়া যায়। রিসোর্টে ২৪ টি কক্ষ আছে, নিজস্ব রেস্ট্যুরেন্টও আছে। কক্ষগুলোর ভাড়া ২,০০০-৪,০০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৮৩৩-৩৬০৩৩৩
১০) সী প্রবাল
নর্থ বীচের এই রিসোর্টটি সী ভিউ রিসোর্ট এন্ড স্পোর্টস থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত। এখানে মোট ১৬ টি রুম আছে। একটি রেস্ট্যুরেন্টও রয়েছে। এটি বীচের পাশে, তবে চারটি রুম ছাড়া অন্য রুমগুলো থেকে সমুদ্র দেখার উপায় নেই। এর প্রতিটি রুমের ভাড়া ১,৫০০-২,৫০০ টাকা।
যোগাযোগঃ ০১৮১৬-৪৬৭৪০৬, ০১৭৬১-২০০৬৮৯
বিঃদ্রঃ সেন্টমার্টিনে হোটেল/রিসোর্ট বুকিং দেয়ার সময় বীচের কাছ থেকে অবস্থান, জেটি থেকে দূরত্ব, রেস্ট্যুরেন্ট, সিকিউরিটি ব্যবস্থা ইত্যাদি দেখে নেয়া দরকার। আর রুমভাড়াও ভালোভাবে দরদাম করা প্রয়োজন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত রুমভাড়া হবে খুবই বেশী, অন্যান্য সময় বেশ কম।
টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার শিপের টিকেটের জন্য নিচের নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন-
+8801816 58 57 57
সেন্টমারটিনের গলাকাটা দামের খাবার খেয়ে আমি খুব বিরক্ত ছিলাম। বাংলা খাবারের কোন টেস্ট নাই। হতাশায় এই চাচার হোটেলে গেলাম। চমৎকার খাবার। একদম পিওর সেন্ট মারটিন এর রান্না। ভাত, ডাল, আলু ভর্তা এবং মুরগি মাত্র ১০০ টাকা প্যাকেজ।
সিরাজগঞ্জ ভাত ঘর । জেটির ঠিক ডান পাশে বিচের উপর। ওনাকে জিজ্ঞেস করলে বলে দিবে কোথায় ভালো মাছ পাবেন , একদম অমায়িক লোক।
Sea Star Tents
সবাই বলেছিল এখন সিজন "সেন্ট মার্টিন" এ যাওয়ার আগে হোটেল কিংবা কটেজ বুক না করলে সমস্যায় পড়তে হবে।
৫বন্ধু মিলে হাল্কা রিস্ক নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম হোটেল বুক ছাড়াই।
সেন্ট মার্টিনের ঘাটে নেমেই ডান পাশে হাটতে থাকলাম আর চোখে পড়ল বিচ ঘেষা বাশের বেড়ায় ঢেরা তাবুর সারি যা আগে কারো কাছ থেকে শুনিও নি কেও বলেও নি।
ঢুকে এক ভদ্র লোকের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এই জায়গার বয়স ১৭দিন এবং তিনি এই ইনোভেটিব কাজটির মালিক। দেরি না করে বুক দিয়ে দিলাম এক রাতের জন্য।
100% সেফটি প্রোভাইড করেছেন লোকটি যা সত্যি অকল্পনীয়। বারবি কিউ সহ ক্যাম্প ফায়ার সব কিছু ব্যবস্থা করা হয়েছে আমাদের বলার সাথে সাথেই।
১ রাতের জন্য বুকিং দিলেও পরের রাতটাও থাকেই আসলাম।
তাবু করে থাকার ইচ্ছা অনেক জায়গাতে থাকলেও সেন্ট মার্টিনে এসে করা হবে ভাবি নি।
সারা দিন+রাত দু'জন লোক ছিল সেফটির জন্য। বাথরুম, গোসল রুম সব কিছুর ব্যবস্তা আছে।
সমুদ্রের আওয়াজে ঘুমাতে আর ঘুম থেকে উঠতে চাইলে অথবা সমুদ্রের সব থেকে কাছে ঘুমাতে চাইলে সবাই ট্রাই করতে পারেন। ধন্যবাদ। :)
যাওয়ার রাস্তা: ঘাটে নেমে সমুদ্র ধরে ডান পাশে ৫মিনিট হাটলে পাওয়া যাবে "Sea Star Tents"
টেন্ট থাকার ভাড়া : ৪ জনের জন্য ১৫০০ টাকা ,৬ জনের জন্য ২৫০০ টাকা।
নোটঃ তথ্যে কোন ভুল ভ্রান্তি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বানান ভুল থাকে নিজ যোগ্যতায় ঠিক করে নিবেন অথবা আমাকে দয়া করে জানাবেন। কারো কাছে নতুন কোন তথ্য থাকলে কমেন্টে জানালে অ্যাড করে দিতে বাধিত থাকবো। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।