Friday, June 8, 2018

রকেট স্টিমারে নদী ভ্রমণ - খুলনা (প্যাডেল স্টিমার)

রকেট স্টিমারে নদী ভ্রমণ...খুলনা


★★★Online Earning Easy way  : https://onlineearningeasyways.blogspot.com/2021/05/pi-network.html?m=1

আবারো চালু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টীমার সার্ভিস ! 


প্রতি সোমবার ঢাকা থেকে মোড়েলগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে নিয়মিত ছেড়ে যাচ্ছে পি এস মাহসুদ প্যাডেল স্টীমার টি । ঢাকা লালকুঠি ঘাট থেকে ছাড়বে সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে !

চলাচল এর রুটঃ 
ঢাকা - চাঁদপুর - বরিশাল - ঝালকাঠি - কাউখালি - হুলারহাট - চরখালী - বড়মাছুয়া (মঠ বাড়িয়া)  - সন্যাসি - মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) । 

ঢাকা লালকুঠি ঘাট থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ এ ছাড়বেঃ 
 সোমবার - পি এস মাহসুদ
 বুধবার - এম ভি বাঙালি / মধুমতি 
 বৃহস্পতি বার - এম ভি মধুমতি / বাঙালি 

মোড়েলগঞ্জ থেকে সকাল ৯.০০ এ ছাড়বেঃ 
বুধবার - পি এস মাহসুদ
শুক্রবার - এম ভি বাঙালি / মধুমতি 
শনি বার - এম ভি মধুমতি / বাঙালি 

বরিশাল থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ এ ছাড়বেঃ
বুধবার - পি এস মাহসুদ
শুক্রবার - এম ভি বাঙালি / মধুমতি 
শনি বার - এম ভি মধুমতি / বাঙালি 

আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমনের জন্য চলে আসুন। ডিজেল এর মূল্য বৃদ্ধি তে সকল লঞ্চ এর ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও, বি আই ডব্লিও টিসি এর জাহাজ গুলোর পুর্বের ভাড়াই বহাল আছে। 

 ঢাকা থেকে বরিশাল ভাড়াঃ 
ডেক শ্রেনীর ভাড়া মাত্র ১৭০/-। (সকল জাহাজ)
প্রথম শ্রেণীর সিংগেল এসি কেবিন - ১০০০/- সাথে ১৫% ভ্যাট। (শুধুমাত্র বাঙালি/মধুমতি জাহাজ)
ডিলাক্স শ্রেণীর এসি কেবিন - ১৩০০/- সাথে ১৫% ভ্যাট। (শুধুমাত্র বাঙালি/মধুমতি জাহাজ)
ডাবল এসি কেবিন (২ জন) - ২০০০/- সাথে +১৫% ভ্যাট। (সকল জাহাজ)
ভি আই পি কেবিন - ৩৩২৫/- + ১৫% ভ্যাট। (শুধুমাত্র বাঙালি/মধুমতি জাহাজ)
২য় শ্রেণীর ডাবল নন এসি কেবিন (২ জন) - ১২৬০/- (শুধুমাত্র প্যাডেল স্টীমার) 

অনান্য রুট এর ভাড়াও আনুপাতিক হারে বেশ কম রয়েছে । 

ঘাট এ অবস্থিত কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করে জাহাজ এ উঠুন। টিকেট ছাড়া কেউ কাউকে কোন রুপ টাকা পয়সা দিবেন না । 

সকল ঘাট ও অফিস এ যোগাযোগ নম্বরঃ 

রকেট রিজার্ভেশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকাঃ 
বি আই ডব্লিউ টি সি (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন)
ফেয়ারলী হাউস, ২৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০।
সৈয়দ জাফর হোসেন
এসি: ম্যানেজার (কমার্স) 
মোবাইলঃ ০১৮১৭ ১২৫ ১৮৪
ফোনঃ ০২- ৯৬৩৪৬২৫ - ২৫৯

বাদামতলী ঘাট, ঢাকাঃ 
খন্দকার মুহাম্মদ তানভীর হোসেন 
এজিএম (কমার্স)
মোবাইলঃ ০১৭১৫ ৪০৮ ০৪২
ফোনঃ ০২ ৫৭৩ ৯০৬৯১ (অফিস)

চাঁদপুর স্টীমার ঘাটঃ 
তানভীর হোসেন 
এসি: ম্যানেজার (কমার্স)
ফোনঃ ০১৮৪১ ৬৩১৩৫ (অফিস) 
মোবাইলঃ ০১৭১০ ৬৮৬ ৮৯০
সোহেল আহমেদ (T. S)
মোবাইলঃ ০১৭১৪ ৭৮৯ ৭৬৬

বরিশাল ষ্টীমার ঘাটঃ
কে এম এমরান 
এজিএম (কমার্স) 
মোবাইলঃ ০১৭৬১ ৫৭২ ৪০৭
ফোনঃ ০৪৩১ ৬৪৭৩৬ (অফিস)

ঝালকাঠি স্টীমার ঘাটঃ 
মোঃ মিরাজ হোসেন (T. S)
মোবাইলঃ ০১৭৫৩ ০৮৫ ৯৮১
ফোনঃ ০৪৯৮ ৬২৩১৭

কাউখালী ঘাটঃ 
মোঃ সমশের
মোবাইলঃ ০১৬৮৭ ৬০২ ০৬৬

হুলারহাট ঘাটঃ 
শাহীন ফকির (OACT)
মোবাইলঃ ০১৭১৪ ৭৯৭ ৩১৩
ফোনঃ ০৪৬১ ৬২৮৮৮

চরখালী ডকইয়ার্ড ঘাট
জনাব আব্দুল হাই (কমিশন এজেন্ট)
০১৭১৫ ৫৮৭ ১৩৬

বড় মাছুয়া ঘাট
মোঃ জাকির হোসেন (উচ্চমান সহকারী)
০১৭১৪ ৬৬০ ৪৩৩

সন্নাসী ডকইয়ার্ড ঘাট
মিঠু (কমিশন এজেন্ট)
০১৭২৫ ৩০০ ২৪১

মোড়েলগঞ্জ ডকইয়ার্ড ঘাট
হুমায়ন আহমেদ (কমিশন এজেন্ট)
০১৭১১ ০৩১ ৯৫৯

মোংলা ঘাট (আপাতত সার্ভিস অফ)
খুলনা ঘাট (আপাতত সার্ভিস অফ)
বৈরী আবহাওয়ায় নৌ ভ্রমনে সতর্ক থাকুন । অধিকতর নিরাপদ নৌযান এ আরোহন করুন । বি আই ডব্লিও টিসি আপনার নিরাপদ ও আরামদায়ক নৌ যাত্রা নিশ্চিত করতে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ ।


রকেট স্টিমারে নদী ভ্রমণ... (সূত্র :JeWel RaNa)

প্যাডেল স্টিমার

বিআইডব্লিউটিসি’র বেশ পুরানো কয়েকটি স্টিমার একসময়ে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত চলাচল করলেও কিছু নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় এখন এ রুট থেমেছে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা থেকে দেশের প্রধান প্রধান নদী পেরিয়ে এসব স্টিমার পৌঁছায় মোড়েলগঞ্জে।

শত বছরের ঐতিহ্য প্যাডেল স্টিমার এবং সেইসাথে যুক্ত হওয়া হালের আধুনিক মধুমতি এবং বাঙালি স্টিমার গুলোতে চড়ে একই সাথে প্রায় ১৭-২০ টি নদীতে ভেসে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা নিতে পারেন, যা বাংলাদেশ এ আর কোন জল বাহন এ নিয়মিত ট্রিপ এ সম্ভবপর নয় ।ঢাকা থেকে খুলনার পথে এখনও চলে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) পরিচালিত জাহাজ পিএস অস্ট্রিচ (১৯২৯), পিএস মাসহুদ (১৯২৯), পিএস লেপচা (১৯৩৮), পিএস টার্ন (১৯৫০) এবং এমভি শেলা (১৯৫১)।


বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা, মেঘনা, ডাকাতিয়া,কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, বিষখালী , গাবখান , সন্ধ্যা, কালিগঙ্গা, কচা, বলেশ্বর , পানগুছি, খাসিয়াখালী , মংলা , পশুর ও রুপসা নদীতে দাপটের সাথে প্রায় শত বছর ধরে চলছে পৃথিবীতে বিলুপ্ত প্রায় এই নৌযান গুলো । ঐতিহ্যময় বাহনে নিরাপদ নৌ ভ্রমন, সাথে সুস্বাদু খাবার ও চমৎকার সার্ভিস পাওয়া যায় , কালের সাক্ষী এই স্টীমার গুলো তে ।



সপ্তাহে ৪ দিন সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট এ বি আই ডব্লিও টিসি এর রকেট সার্ভিস এ প্যাডেল স্টীমার গুলো ছেড়ে যাচ্ছে ঢাকা নদী বন্দর এর ১৬ নং পল্টুন থেকে। অন্য দু দিন এম ভি বাঙালি ও এম ভি মধুমতি জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে।

স্টীমার গুলোর চলাচলের রুটঃ ঢাকা - চাঁদপুর - বরিশাল - ঝালকাঠি - কাউখালী - হুলারহাট - চরখালী - বড় মাছুয়া (মঠবাড়িয়া) - সান্ন্যাসি - মোড়লগঞ্জ । প্রতি বুধবার মংলা হয়ে খুলনা পর্যন্ত যায় ।

শনিবার - পি এস লেপচা / পি এস টার্ন
রবিবার - পি এস মাহসুদ / পি এস অস্ট্রিচ
সোমবার - এম ভি বাঙালি / মধুমতি
মঙ্গলবার - পি এস লেপচা / পি এস টার্ন
বুধবার - পি এস অষ্ট্রিচ / পি এস মাহসুদ ( মংলা হয়ে খুলনা পর্যন্ত যাবে)
বৃহস্পতিবার - এম ভি মধুমতী / এম ভি বাঙ্গালী
শুক্রবার বন্ধ।

ঢাকা থেকে ছাড়ে সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ মিনিটে
১১ঃ০০ রাত চাদপুর ছাড়ে।
৬ঃ০০ সকাল বরিশাল ছাড়ে।
৮ঃ০০ সকাল ঝালকাঠি ছাড়ে।
৯ঃ৩০ সকাল কাউখালী ছাড়ে।
১০ঃ০০বেলা হুলারহাট ছাড়ে।
১১ঃ৩০ বেলা চরখালি ছাড়ে।
১ঃ০০ দুপুর মাছুয়া ছাড়ে।
২ঃ০০ দুপুর সন্যাসী ছাড়ে।
৩ঃ০০ বেলা মোড়েলগঞ্জ ছাড়ে।
৬ঃ০০ সন্ধ্যা মংলা ছাড়ে।
৮ঃ৩০ রাত খুলনা পৌছে।

২ঃ৪৫ ভোর খুলনা ছাড়ে।
৬ঃ০০ সকাল মংলা ছাড়ে।
৯ঃ৩০ সকাল মোড়েলগঞ্জ ছাড়ে।
১০ঃ০০ সকাল সন্যাসী ছাড়ে।
১১ঃ০০ বেলা মাছুয়া ছাড়ে।
১ঃ০০ দুপুর চরখালি ছাড়ে।
২ঃ০০ দুপুর হুলারহাট ছাড়ে।
২ঃ৩০ দুপুর কাউখালী ছাড়ে।
৪ঃ০০ বিকেল ঝালকাঠি ছাড়ে।
৬ঃ৩০ সন্ধ্যা বরিশাল ছাড়ে।
১ঃ০০ রাত চাদপুর ছাড়ে।
৬ঃ০০ সকাল ঢাকা পৌছে।

প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন ছাড়াও তৃতীয় শ্রেণির ডেক সার্ভিস আছে প্যাডেল স্টিামারে।

সদরঘাট এর ১৩নং পন্টুন থেকে সন্ধ্যা ৬'৩০মি ছেড়ে যায়।

ঢাকা থেকে চাঁদপুর ভাড়া জনপ্রতি প্রথম শ্রেণি ৪০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ২৪০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ১০০ টাকা।

ঢাকা-বরিশাল প্রথম শ্রেণি ১ হাজার টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ৬৩০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ২৫০ টাকা।

ঢাকা-ঝালকাঠি প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ১৯০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ৭৬০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ২৭০ টাকা।

ঢাকা-কাউখালী প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ২৪৫ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ৮৪০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ২৮০ টাকা।

ঢাকা-হুলারহাট (পিরোজপুর) প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ৩৮০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ৮৫৫ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ৩শ’ টাকা।

ঢাকা-চরখালী প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ৪২৫ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ৮৮৫ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ৩২০ টাকা।

ঢাকা-বড় মাছুয়া প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ৬১৫ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ১ হাজার ১০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ৩৫০ টাকা।

ঢাকা-মোড়েলগঞ্জ প্রথম শ্রেণি ১ হাজার ৬১৫ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি ১ হাজার ৫০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণি ৩৬০ টাকা।

ঢাকায় বাদামতলীতে স্টিামারঘাট। সারাদিন সেখানে নোঙর করে থাকলেও স্টিমারগুলো বিকেল ৫টা থেকে ছাড়ার আগ পর্যন্ত থাকে সদরঘাটে।



ঢাকা থেকে প্রতি শুক্র বার সার্ভিস টি বন্ধ থাকবে । মোড়লগঞ্জ / খুলনা থেকে প্রতি রবি বার সার্ভিস টি বন্ধ থাকবে ।

বি আই ডব্লিও টিসি এর রকেট সার্ভিস এর যে কোন জাহাজ বা স্টীমার এ আপনার নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে ০২ ৯৬৬ ৭৯৭৩ অথবা ০১৭১১ ১০৩ ৯২২ এই নম্বর এ যোগাযোগ করতে পারেন।

টিকিট সংগ্রহ করুন এখান থেকে -
বিআইডব্লিউটিসি (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন)
ফেয়ারলী হাউস : ২৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০।

* তথ্যঃ MV Modhumoti এর ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহীত।

ছবিঃ আমার তোলা এবং Mir Abdul Khalil

যাত্রাপথে আপনার ব্যবহৃত ময়লা আবর্জনা ফেলে নদী তথা পরিবেশ দূষণ থেকে বিরত থাকুন।

এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম জার্নি অথচ এদেশের সবচে উপভোগ্য ভ্রমণও কিন্তু এটি(সূত্র :Apu Nazrul)



এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম জার্নি অথচ এদেশের সবচে উপভোগ্য ভ্রমণও কিন্তু এটি। এদেশে জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে চলা আর কোন প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্টের টানা ২৭ ঘন্টা রানিং টাইম নাই। অথচ প্যাডেল স্টিমারে চেপে ঢাকা থেকে খুলনা যেতে সময় লাগে ঝাড়া ২৭ ঘন্টা। এই ভ্রমণে দেখবেন দক্ষিণ বাংলার মানুষ ও প্রকৃতি, তাদের নদীকেন্দ্রিক জীবন আর দেখবেন নদী। এই ভ্রমণে আপনি ছুয়ে যাবেন বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, মেঘনা, ডাকাতিয়া, কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান, সন্ধ্যা, কচা, বলেশ্বর, মংলা, পশুর ও রুপসা নামের নদীগুলোকে। পাশ কাটাবেন বা ছুঁয়ে যাবেন অনেকগুলো জেলা। এক ভ্রমণে এত নদী আর জেলা দেখার সুযোগ আর কোন ভ্রমণে আছে কি?

ছবিতে যেমনটা দেখছেন ঘুম ভেঙ্গে ব্রীজে এসে দেখি স্টিমারের এসি কেবিনের শৈত্যের চেয়ে বাইরের শৈত্য বরং বেশি আরামদায়ক। যাত্রী এমনিতেও ছিলোনা, আর যা ছিলো বরিশালে তাও নেমে গেছে। যদি থাকতোও এসি কেবিনের প্রথম শ্রেণীতে তার কোন প্রভাব পড়তোনা। স্টিমার এগুচ্ছিলো গাবখান চ্যানেলের জল কেটে। সামনে ধূসর একটা সেতু, বিটিভি যুগে এটা উদ্ভোধনের সময় বার বার বলছিলো দেশের উচ্চতম সেতু। ক'বছর আগে এটার উপর নিয়ে গিয়েছিলাম, আজ যাচ্ছি নিচ দিয়ে। দুপাশের গ্রাম তখনো আধোঘুমে, কুয়াশারর চাদর গায়ে আড়মোড়া ভাঙ্গছে নতুন একটা দিন। এত চমৎকার ভোর খুব কমই এসেছে আমার জীবনে।


মংলা পোর্ট


জার্নিটা বোরিং হবে ভাবছেন? উপযুক্ত সঙ্গী পাশে থাকলে (যার সঙ্গী নাই তার পাশে থাকতে পারে উপযুক্ত বই) বা একাকী কোনভাবেই এই জার্নি আপনাকে বোরড করবেনা। প্রথমবার চড়ার পরেই আমি প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে অপ্রয়োজনেই বার বার ছুটে যাই স্ট্রেস ঝাড়তে। আমার বিশ্বাস আপনিও যাবেন।

প্রায় শত বছরের পুরোনো সরকারী রকেট সার্ভিসের আওতায় এখনো চারটি স্টিমার চলছে পাবলিক টান্সপোর্ট হিসেবে যা আর পৃথিবীর কোথাও এভাবে চলছেনা। লেপচা, টার্ণ, অস্ট্রিচ ও মাসহুদ নামের ঐতিহ্যবাহী নৌযানগুলোতে নিরাপদ নৌ ভ্রমনের সাথে সুস্বাদু খাবার ও চমৎকার সার্ভিস পাওয়া যায় যা এক বিরল অভিজ্ঞতা। রানী এলিজাবেথ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী কে চড়েননি এই নৌযানে? স্টিমারের খাবার মনে ধরেছিলো স্বয়ং মুজতবা আলীর! এখনো বিদেশ থেকে যেসব ট্যুরিষ্ট বাংলাদেশে আসেন তাদের টু ডু লিষ্টের শুরুর দিকেই থাকে প্যাডেল স্টিমারে চড়া। আমি এখন পর্যন্ত যে কয়জন বিদেশী ট্যুরিষ্টকে সঙ্গ দিয়েছি /রকেটে পেয়েছি তাঁরা সবাই ভ্রমণ শেষে অত্যন্ত সন্তুষ্ট ছিলেন। BIWTC'র এই সার্ভিস দেশের গর্ব, জাতির গর্ব। আমার মতে বিশ্বের সবচে বড় বদ্বীপ নদীমাতৃক বাংলাদেশকে জানতে, চিনতে, উপলব্ধি করতে নৌ-ভ্রমণের বিকল্প নেই। আপনিই বা বাদ থাকবেন কেন?

লাইটার জাহাজ মংলা পোর্ট যাচ্ছে, পশুর নদীতে সূর্য অস্ত যাচ্ছে, আর কোরাল ফিশ ফিলেট ফ্রাই আমার পেটে যাচ্ছে!

সপ্তাহে ৪দিন সন্ধ্যায় বিআইডব্লিওটিসির রকেট সার্ভিসের আওতায় প্যাডেল স্টীমারগুলো ঢাকা ছেড়ে যায় মোড়েলগঞ্জের উদ্দেশ্যে। আর শুধুমাত্র একদিন খুলনা যায় ২৭ ঘন্টা সময় লাগিয়ে।

এই ভ্রমণ করতে আপনার খরচ হতে পারে মানভেদে ৩১০ টাকা থেকে ৫৩০০ টাকা পর্যন্ত। আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী উপভোগ করে নিতে পারেন এই এন্টিক সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাবার আগেই। নয়তো ভবিষ্যতে আফসোস করতে হবে।

ঘুম ভেঙ্গে ব্রীজে এসে দেখি স্টিমারের এসি কেবিনের শৈত্যের চেয়ে বাইরের শৈত্য বরং বেশি আরামদায়ক। যাত্রী এমনিতেও ছিলোনা, আর যা ছিলো বরিশালে তাও নেমে গেছে। যদি থাকতোও এসি কেবিনের প্রথম শ্রেণীতে তার কোন প্রভাব পড়তোনা। স্টিমার এগুচ্ছি গাবখান চ্যানেলের জল কেটে। সামনে ধূসর একটা সেতু, বিটিভি যুগে এটা উদ্ভোধনের সময় বার বার বলছিলো দেশের উচ্চতম সেতু। ক'বছর আগে এটার উপর নিয়ে গিয়েছিলাম, আজ যাচ্ছি নিচ দিয়ে। দুপাশের গ্রাম তখনো আধোঘুমে, কুয়াশারর চাদর গায়ে আড়মোড়া ভাঙ্গছে নতুন একটা দিন। এত চমৎকার ভোর খুব কমই এসেছে আমার জীবনে।


সরকারী এই নৌযানগুলো আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। প্রাইভেট লঞ্চের যুগে সরকারী কোন প্রচারণা নাই, থাকলে এ সার্ভিস থেকে সরকার বহু অর্থ উপার্জন করতে পারতো। তাই আমাদের সম্পদের প্রচারণা আমাদেরই করতে হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদকে নিজের সম্পদ ভাবার মানসিকতা নিয়ে ভ্রমণে এসব বাহনকে প্রায়োরিটি দিতে হবে। শতবর্ষী হবার কারণে এই নৌযানগুলোর এসি মাঝে মাঝে ঝামেলা করে। এইসব ছোটখাটো সমস্যা মাথায় রেখে ভ্রমণ করবেন। অন্যথায় আধুনিক মধুমতি বা বাঙালি তো আছেই। সেসব নিয়ে আরেকদিন লিখবো

নদী আমাদের দেশের সবচে বড় সম্পদ। তাই নদী সম্পর্কে জানুন, নদীতে ভ্রমণ করুন, ভালোবাসুন নদীকে। নদী দূষণ বন্ধে সোচ্চার হোন। ৭০০ নদী বাঁচলে, বাংলাদেশ বাঁচবে। সরকারী সম্পদ প্যাডেল স্টিমার হোক আমাদের রিভার ট্যুরিজম এর প্রতীক।

খুলনা 


আমার দেখা দেশের অন্যতম সুন্দর শহর। যানজটমুক্ত, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চমৎকার একটা শহর। শহরের মধ্যে দেখার যায়গা খুব বেশি নেই, কিন্তু খুলনাকে কেন্দ্র করে ঘুরে আসা দক্ষিণ-পশ্চিম বংগের আকর্ষণীয় জায়গাগুলো। এছাড়া খাওয়া দাওয়ার বিষয় তো আছেই। খুলনা এসেছি কিছুদিন হলো। এর মধ্যে যে জায়গাগুলোতে ঘুরলাম/ঘুরালাম সেগুলো নিয়ে লিখি আজকে:

রূপসা ব্রীজ:
খুলনার মূল নদী রূপসা। এ নদীর উপরে খান জাহান আলী ব্রীজ রয়েছে। বিকেল ও সন্ধ্যাটা কাটানোর চমৎকার জায়গা। ব্রীজের এপ্রোচ রোডটাও অনেক সুন্দর। দুপারেই প্রতিদিন বিকেলে শত শত মানুষ জমা হয়। চাইলে ব্রীজে উঠে পার হয়ে যেতে পারবেন অন্য প্রান্তে। অপর পারে রূপসা নদীতে ভ্রমণের জন্য নৌকা ভাড়ার ব্যবস্থাও আছে। রূপসা নদীতে সূর্যাস্ত ছাড়াও সন্ধ্যার পর জায়গাটা অনেক ভালো লাগে।

৬ নং ঘাট:
পুরণো কিন্তু অভিজাত এলাকা খালিশপুরের দিকে যেতে জোড়াগেট থেকে একটু দূরে এই ঘাটের অবস্থান। রূপসা নদীর এই পাড়টায় কিছুক্ষণ বসলে দেখা পেয়ে যেতে পারেন শুশকের। বাধানো এই ঘাটেও প্রতিদিন জমা হয় অনেক দর্শনার্থী। তবে নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা এখানে নেই।

খাবার: অবশেষে খেয়ে এলাম খুলনার চুকনগরের আব্বাস হোটেলের বিখ্যাত খাসীর মাংসের চুঁইঝাল। 
চুইঝালের জন্য বিখ্যাত খুলনা। এক প্রকার শেকড় এই চুই ঝাল দিয়ে রান্না করা হয় বিভিন্ন ধরণের মাংস। উল্লেখযোগ্য কয়েকটা দিলাম:



আব্বাস হোটেল:
মূল আব্বাস হোটেল চুকনগরে অবস্থিত, মূল শহর থেকে বেশ দূরে। তবে তাদের ২য় শাখা নগরীর সোনাডাংগা বাস স্ট্যান্ডের কাছে। এখানে একটিমাত্র আইটেম বিক্রি হয়। সেটা হচ্ছে চুই ঝালের খাসির মাংস। সংগে সাদা ভাত দিয়ে খাওয়া লাগে অসাধারণ এ খাবারটি। প্রতি পিস মাংসের দাম ১১০ টাকা। এক সাথে বেশি খেয়ে ফেলবেন না কিন্তু পেটে সহ্য নাও হতে পারে।

কামরুলের হোটেল:
নগরীর জিরো পয়েন্ট মোড়ের কাছে এ হোটেল। চুইঝালের গরুর মাংসের জন্য এ হোটেল বিখ্যাত।

কেওড়া:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের কাছে কেওড়ার অবস্থান। গরুর, খাসির চুই ঝালের মাংসের পাশাপাশি এখানে পাবেন চীনা হাসের চুইঝালের মাংস। এছাড়া খিচুড়িও পাবেন।

জামিলের ফিস বার বি কিউ:
নগরীর বেশ বাইরে বাইপাসে আড়ংঘাটা নামক জায়গায় পাবেন জামিলের ফিস বার বি কিউ। কঠিন নিন্দুকও স্বীকার করতে বাধ্য হবে দেশে এ ধরণের ফিস বার বি কিউ পাওয়া কঠিন। মাছ আপনি পছন্দ করার পর আপনার সামনেই কেটে ধুয়ে চমৎকার এ ফিস বার বি কিউ তৈরী হয়ে যাবে ৩০ মিনিটের মধ্যে। মাছের সব অংশে সঠিকভাবে মসলা পৌছানো ও ভালোভাবে পোড়ানের কারণে স্বাদ অপূর্ব। তবে মনে রাখবেন খরচ কিন্তু ভালোই (রিজনেবল)। প্রায় ২ কেজি ২০০ গ্রামের একটি রেড স্ন্যাপার বার বি কিউ করে খেতে ৫ জনে খরচ পড়েছে ৩,০০০ টাকার মত।

আগের পোস্ট লেখার পর থেকে আমি ব্যবস্তার কারণে অফিসের কাজের বাইরে কোথাও যেতে পারিনি। এদিকে অব্যাহত চুই ঝালের মাংস খাওয়ার কারণে আমার ওজন গত দুমাসে বেড়ে গেছে ৩.৫ কেজি! তাই বাধ্য হয়ে নজর দিলাম মাংসের পরিবর্তে মাছ খাওয়ার দিকে।

চিংড়ির জন্য বেশি বিখ্যাত হলেও খুলনায় কিন্তু বিভিন্ন ধরণের মাছ পাওয়া যায়। এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের ইকোসিস্টেমস থাকায় নদী, সমুদ্র, সুন্দরবন এলাকা, ঘের, হাওড় বাওড়ের মাছ পাওয়া যায়। মাছ দিয়ে খাবার জন্য আমার পছন্দের দুটো হোটেল আছে:

দত্তের হোটেল: খুলনা কোর্টের ঠিক গেইটে এ হোটেলের অবস্থান। এখানে দুপুর বেলা অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি চমৎকার সব মাছ পাওয়া যায়। ভেটকি মাছ, খরসুনো (বাটা প্রাজাতির) মাছ, ফাইস্যা মাছ, বাইন মাছ, ছোট (পাঁচ মিশালি) মাছ ইত্যাদি। দু:খের বিষয় হচ্ছে এখানে শুধু দুপুুরেই খাওয়া পাওয়া যায়, রাতের বেলা বন্ধ থাকে। অতন্ত্য ব্যস্ত এ এলাকায় দুপুরে ভালোই ভীড় হয়। খাওয়া দাওয়া শেষে আবার রসগোল্লাগুলোর দিকেও চোখ যেতে পারে। খরচ একটু বেশিই! ভাজি ভর্তাসহ খেলে ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে পড়বে।

এর বাইরে সার্কিট হাউজ ময়দানের উল্টোপাশে শাহীন হোটেলের নিচে একটি ভাতঘর আছে। আমি প্রায়ই দুপুুরে ওখানে খেতে যাই। শোল, ভেটকি, ফাইস্যা, রিটা, শিং, কৈ, চমৎকার সব মাছ পাওয়া যায়। তবে এক দিনে সর্বোচ্চ ২/৩ টার বেশি মাছ পাওয়া যায়না। এর মধ্যেই পছন্দ করতে হবে। না হলে মুরগি/গরু দিয়ে খেতে হবে। খরচ পড়বে ১০০-১২০ টাকার মধ্যে।

এর মধ্যে অফিসের কাজে আমাকে বেশ কয়েকটা জায়গায় যেতে হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বটিয়াঘাটা-চালনার রাস্তা। রূপসা নদীর ধার দিয়ে এ রাস্তা ধরে আমার মনে হচ্ছিল “এ পথ যদি শেষ না হতো” গানটা মনে হয় এ রাস্তার জন্য লেখা। বাতাস আর নদীর পরিবেশ মিলে এত সুন্দর রাস্তাটার কিছু সৌন্দর্য ভিডিওটাতে পাবেন। ওয়াইসি নামের একটি রিসোর্টও চোখে পড়েছিল (৫০ টাকা টিকেট)। সময়ের অভাবে যাওয়া হয়নি। ইচ্ছা আছে এক বিকেলে সাইকেল চালিয়ে ওই রাস্তায় যাওয়ার।

7 comments:

  1. অসাধারন লেগেছে।
    খুব ভালো লাগলো।

    ReplyDelete
  2. আমার কিছু বিস্তারিত তথ্য জানার ছিল। কোনো কন্ট্রাক্ট নাম্বার কি হবে এদের?

    ReplyDelete

  3. বি আই ডব্লিও টিসি এর রকেট সার্ভিস এর যে কোন জাহাজ বা স্টীমার এ আপনার নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে ০২ ৯৬৬ ৭৯৭৩ অথবা ০১৭১১ ১০৩ ৯২২ এই নম্বর এ যোগাযোগ করতে পারেন।

    ReplyDelete
  4. ধন্যবাদ। সুন্দর এবং অসাধারণ পোস্ট।
    #Discover Bangladesh

    ReplyDelete
  5. Best 888casino Restaurants in San Diego | Mapyro
    Find all 888casino restaurants in San Diego, CA 청주 출장샵 and other 태백 출장샵 places 인천광역 출장안마 to 제주도 출장안마 stay closest to you. Hotel, Casino, Food. Nearby Restaurants · 용인 출장안마 Grocery Store

    ReplyDelete